জবির ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য চিকিৎসক একজন
৯ নভেম্বর ২০১৮ ১০:০৩
।। জগেশ রায়, জবি কসেপন্ডেন্ট ।।
জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) চিকিৎসার সুব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন ডাক্তার ও দুই জন সহকারী দিয়েই চলছে নামমাত্র সেবা।
অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় ক্যাম্পাসের আশেপাশে ও ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় মেস ভাড়া নিয়ে থাকেন শিক্ষার্থীরা। গ্রাম থেকে শহরে আসা অনেকেই নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় শুরুতেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায়ই সর্দি, জ্বর, ডায়রিয়া, জন্ডিস, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এসব সমস্যা নিয়ে মেডিকেল সেন্টারে গেলেই হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়।
অভিযোগ রয়েছে, মেডিকেল সেন্টারে মাথাব্যথা, জ্বর ও ডায়রিয়ার ওষুধ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। চিকিৎসার জন্য গেলেও এক ‘বিরাট প্রেসক্রিপশন’ হাতে দিয়ে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ার পরামর্শ মেলে।
আরও পড়ুন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস: গৌরব ও সাফল্যের ১৩ বছর
জানা গেছে, মেডিকেল সেন্টারটির জন্য বছরে মাত্র দুই লাখ টাকা বাজেট। প্রতি শিক্ষার্থীর চিকিৎসাসেবার জন্য বাজেট মাত্র দশ টাকা।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত বলেন, ‘আমি জ্বর আর মাথাব্যথা নিয়ে মেডিকেল সেন্টারে গিয়েছিলাম, হাতে কয়েকটা ট্যাবলেট দিয়ে প্রেসক্রিপশন লিখে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে খেতে বলেছে।’
সরেজমিনে মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দিন দিন মেডিকেল সেন্টারটির পরিসর ছোট হয়ে আসছে। আগে তিনটি কক্ষ থাকলেও এখন একটি কক্ষেই চিকিৎসার কাজ সারতে হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক চিকিৎসা সরঞ্জামই মেডিকেল সেন্টারে নেই। কক্ষের একপাশে রোগীদের জন্য একটি শয্যা, বিপরীত পাশে একজন চিকিৎসক ও তার সহকারীর বসার জায়গা, ওষুধ রাখার জন্য একটি আলমারি ও একটি রেফ্রিজারেটর।
সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে একটি করে ওজন ও প্রেশার মাপার যন্ত্র, একটি শয্যা ও একটি অ্যাম্বুলেন্স।
আরও পড়ুন: জবি ছাত্রলীগের ২ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার
এ বিষয়ে ডা. মিতা শবনম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জবি মেডিকেল সেন্টারে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। আমি এখানে একা হওয়ার কারণে কষ্ট হয়ে যায়। আমার সাধ্য অনুযায়ী কাজ করতে চেষ্টা করি। আমি কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসক ও চিকিৎসার সরঞ্জাম বাড়ানোর জন্য বারবার বলেছি। বিষয়টি তারা দেখছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।’
ওষুধ ও সেবা দেওয়া ব্যাপারে বলেন, ‘পর্যাপ্ত ওষুধ বরাদ্দ না থাকায় রোগীদের সবসময় ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয় না। মেডিকেল সেন্টারের বাজেট বাড়ালে এবং প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতি বাড়ালে এখানে আরও সেবা দেয়া সম্ভব।’
মেডিকেল সেন্টারটির খারাপ অবস্থার কথা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেডিকেল সেন্টার করার মত পর্যাপ্ত জায়গা এখানে নেই। তবে কেরানীগঞ্জে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি ক্রয় করেছি। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যা যা দরকার তার সবকিছু করা হবে।’
সারাবাংলা/জেআর/এমও
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার স্বাস্থ্যসেবা