Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাটহাজারীতে আ’লীগের পতাকা ওড়াতে চান সালাহ্‌উদ্দিন


৯ নভেম্বর ২০১৮ ২০:২৬

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ১৯৭৩ সালে সর্বশেষ চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসন থেকে তৎকালীন মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ ওহাব আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর গত ৪৫ বছরে আওয়ামী লীগ ওই আসনে আর জয়ের মুখ দেখেনি।

২০০৮ ও ২০১৪ সালে পরপর দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটের সঙ্গী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি জোটসঙ্গী হচ্ছে কি-না সেই আলোচনা যখন চলছে, তখন নৌকার মাঝি হতে হাটহাজারীর মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন উচ্চশিক্ষিত তরুণ মাহমুদ সালাহ্উদ্দিন চৌধুরী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করা সালাহ্‌উদ্দিন কেন্দ্রে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিতে। এলাকার মানুষকে সেবা দিতে এবার সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী এই নেতা। মনোনয়ন পেলে ৪৫ বছর পর হাটহাজারীতে আওয়ামী লীগের পতাকা উড়াতে পারবেন বলেও মনে করেন এই নেতা।

সারাবাংলার সঙ্গে আলাপে নিজের জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে কয়েকটি সমীকরণের কথা জানিয়েছেন সালাহ্উদ্দিন।

‘হাটহাজারীতে ভোটার আছে ২ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে সদরেই আছে ৬০ হাজার। আমার বাড়ি সদরেই। সম্ভাব্য আর কোন প্রার্থীর বাড়ি সদরে নেই। আমি প্রার্থী হলে সদরের বেশিরভাগ ভোট টানতে পারব।’

দেশের সবচেয়ে বড় কওমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার অবস্থান এই হাটহাজারীতে, যে মাদ্রাসার পরিচালক হেফাজতের আমির আহমদ শফি। রাজনৈতিক দলের নেতারা মনে করেন, হাটহাজারীতে ভোটের উপর কওমীপন্থীদের প্রভাব আছে।

কওমীদের ভোট টানতে পারবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহ্‌উদ্দিন বলেন, ‘আমার আপন ভাই দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে পাশ করেছে। আমার বাড়ি আর বড় মাদ্রাসা পাশাপাশি। আমার ঘরের জানালা দিয়ে মাদ্রাসার ভেতরে দেখা যায়। আমার অনেক আত্মীয়স্বজন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। আমি প্রার্থী হলে কওমীদের ভোট অন্যসব প্রার্থীর চেয়ে বেশি পাব বলে মনে করি।’

গত পাঁচ বছর ধরেই নিয়মিত-অনিয়মিতভাবে এলাকায় গণসংযোগ করে যাচ্ছেন সালাহ্‌উদ্দিন। তবে গত তিন-চার মাসে তিনি পড়ে আছেন এলাকায়।

‘হাটহাজারীর প্রত্যেকটি ইউনিয়নে আমি সভা-সমাবেশ করেছি। প্রায় প্রতিটি গ্রামে গিয়ে উঠান বৈঠক করেছি। প্রতি শুক্রবার মসজিদ-মাদ্রাসায় গিয়েছি। দুর্গাপূজায় যে গ্রামে মাত্র একটি পূজামণ্ডপ, সেই গ্রামেও আমি গিয়েছি। সাধ্যমতো গরিব-দুঃখীসহ সব মানুষের পাশে আছি। আমি প্রস্তুত। মনোনয়ন আমার নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর ছেড়ে দিয়েছি।’

সালাহ্‌উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে এবার প্রচুর সংখ্যক তরুণ প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে আলোচনা আছে। সেদিক থেকেও আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি। এছাড়া আমি দুঃসময়ে ছাত্রলীগ করেছি। ৯১ থেকে ৯৫ সাল এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল কিংবা ওয়ান ইলেভেনের সময় আমি রাজপথে ছিলাম। আশা করি নেত্রী অবশ্যই দুঃসময়ের কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন।’

১৯৮৮ সালে মাহমুদ সালাহ্‌উদ্দিন চৌধুরী হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯০ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন।

সেই বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতির যাত্রা শুরু করেন আওয়ামী লীগ পরিবারে জন্ম নেওয়া সালাহ্‌উদ্দিন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দিন হলের সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য, ছাত্রলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য এবং ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পরে আন্তর্জাতিক সদস্য হয়েছিলেন।

পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য।

বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে এই দল থেকে দুজন নেতার নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। এরা হলেন- হাটহাজারীর সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা ও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মীর মো. নাসির উদ্দিনের ছেলে ব্যারিস্টার মীর মো.হেলাল উদ্দিন। শাকিলা-হেলাল দুজনই বয়সে তরুণ।

তাদের মোকাবেলার জন্য আওয়ামী লীগ তরুণ মাহমুদ সালাহ্‌উদ্দিন চৌধুরীকে বেছে নেবে কি-না, সেটা দেখার জন্য ভোটারদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।

সারাবাংলা/আরডি/একে


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর