Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কাছে সরকার জিম্মি: সৈয়দ আবুল মকসুদ


১০ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:৪২

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিশৃঙ্খল আচরণের ফলেও কোনরকম ব্যবস্থা না নেওয়ায় সরকার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কাছে একরকম জিম্মি বলেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট লেখক-কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। শনিবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

বিজ্ঞাপন

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সম্প্রতি পাশ হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের কিছু বিষয়ে ভুল বুঝিয়ে শ্রমিকদের ক্ষুব্ধ করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় কয়েকদিন আগে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা দুদিনের কর্মবিরতির সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ চালক ও যাত্রীদের শরীরে পোড়া মবিল লাগিয়ে দেওয়া এবং মেয়েদের সাথে খারাপ আচরণ ছিল সবচেয়ে ঘৃণিত ও আপত্তিকর কাজ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার পরও এখন পর্যন্ত এই ঘৃণিত কাজের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দেখা যায়নি। সরকার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের প্রতি এতোটাই নমনীয় আচরণ প্রদর্শন করে যে এতে মনে হয় সরকার পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ফেডারেশনের কাছে একধরনের জিম্মি হয়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক হতে হবে, আইন মানতে হবে। আইন না মানার কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। পথচারীদের মাঝেও আমরা দেখছি কানে হেডফোন লাগিয়ে এবং মোবাইলে কথা বলতে বলতে অসতর্কভাবে রাস্তায় চলাচল করতে। এতে করে প্রতিবছর অনেক সাধারণ মানুষসহ অনেক স্বপ্নময় তরুণের অকাল মৃত্যু ঘটছে। যা থেকে পরিত্রাণের জন্যে আইন পালনের পাশাপাশি সচেতনতাও তৈরি করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনার প্রভাবে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা। ফলে দুর্ঘটনার কারণে বছরে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ২ থেকে ৩ শতাংশ হারাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতীয়ভাবে বাংলাদেশের নানা অর্জন থাকলেও সড়কের নিরাপত্তা বিধানে আমরা এখনও পিছিয়ে রয়েছি।

তিনি বলেন, সেবার পরিবর্তে সড়ক পরিবহন সেক্টরে প্রতিনিয়ত চরম নৈরাজ্য ও প্রতিহিংসা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সর্বশেষ গত কয়েকদিন পূর্বে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের সময়ে গাড়ির চালক ও যাত্রীদের মুখে উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকদের পোড়া মবিল মাখিয়ে দেওয়ার দৃশ্য সবাইকে বিস্মিত না করে পারেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলার পরও এই ঘটনার দৃশ্যমান কোনো বিচার কিংবা অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে আমরা দেখতে পায়নি। দুর্বল সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা, অপরিকল্পিত রাস্তা, মহাসড়কে হাটবাজার বসা, স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকা, ট্রাফিক আইন না মানা, ভুয়া লাইসেন্সধারী ও অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, চালকদের অতিরিক্ত পরিশ্রম, বিআরটিএর ঘুষ-দুর্নীতি ইত্যাদি নানা কারণে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: ‘পুলিশ ট্রাফিক আইন ভাঙলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ছাড় নয়’

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত একটি পরিকল্পিত, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, জনবান্ধব আধুনিক সড়ক ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেনি। ফলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল কোনোভাবেই থামছে না। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ৬০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। পথচারীদের মধ্যে জেব্রাক্রসিং-ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে না করে বেপরোয়াভাবে চলাচল সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি করছে। একই সাথে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নগরে অ্যাপভিত্তিক যে রাইড শেয়ার চালু হয়েছে তার চালকদের সক্ষমতা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিয়মের মধ্যে আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কয়েক মাস আগে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে করা আন্দোলনে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন পথ দেখালেও আমরা এখনও সচেতন হয়নি। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন করা হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে জানান জনাব কিরণ। তবে এই আইনের কিছু বিষয় নিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা যে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয়েছে তারও অবসান হওয়া প্রয়োজন।

প্রতিযোগিতায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এতে বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, মো. আতিকুর রহমান, সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন, ড. তাজুল ইসলাম তুহিন এবং ফ্রীল্যান্স সাংবাদিক জাহিদ রহমান।

সারাবাংলা/এনএইচ

পরিবহন সেক্টর বিতর্ক প্রতিযোগিতা সৈয়দ আবুল মকসুদ

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর