Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চোখ হারানো ১৭ জনকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল


১১ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:০১

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিয়ে ‘চোখ হারানো’ ১৭ জনের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত।

রোববার (১১ নভেম্বর) চেম্বার বিচারপতি নুরুজ্জামান আপিল শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। ফলে আপতত হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।

আদালতে আপিল আবেদনের পক্ষে ছিলেন শ ম রেজাউল করিম। রিটের পক্ষে ছিলেন আইজীবী অমিত দাসগুপ্ত।

এর আগে, চুয়াডাঙ্গায় ওই চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিয়ে ‘চোখ হারানো’ ১৭ জনের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে গত ২১ অক্টোবর রায় দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদেশে ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে ৫ লাখ টাকা ও আইরিশ কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণের বাকি অর্ধেক টাকা দিতে বলা হয়।

এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, তা তদারকি করতে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত। তবে রায়ে চোখ হারানোর ঘটনায় হাসপাতাল ও ওষুধ কোম্পানিকে দায়ী করা হলেও চিকিৎসককে অব্যাহতি দেন আদালত।

পরে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরদ্ধে আপিল করে ওষুধ কোম্পানি আইরিশ। আজ রোববার ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে নো অর্ডার দিয়ে মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন আদালত।

উল্লেখ্য, ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিয়ে ‘চোখ হারানো’ ২০ জনের প্রত্যেককে এক কোটি করে টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ১ এপ্রিল রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর আগে, একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে ২৯ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরের দ্বিতীয় দিন ৫ মার্চ ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়। অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন। তবে বাসায় ফিরেই ওই ২৪ জনের মধ্যে ২০ জন রোগীর চোখে ইনফেকশন দেখা দেয়।

এসব রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ মার্চ অপারেশনের পর ৬ মার্চ তাদের প্রত্যেককেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে ওই দিনই কারও বিকেলে, কারও সন্ধ্যায়, কারও রাত থেকে চোখে জ্বালা-যন্ত্রণা শুরু হয় ও পানি ঝরতে শুরু করে। পরদিনই তারা যোগাযোগ করেন ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে। তাদের কিছু চিকিৎসা দিয়ে ফের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যন্ত্রণা অসহনীয় হয়ে উঠলে ফের তারা ইম্প্যাক্টে যান। সেখান থেকে তখন কয়েকজন রোগীকে স্থানীয় এক চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

স্থানীয় ওই চক্ষু বিশেষজ্ঞ তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এদের মধ্যে চার জন রোগী নিজেদের উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় আসেন। পরে ইম্প্যাক্ট থেকে ১২ মার্চ একসঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নেওয়া হয়। কিন্তু কোনো চিকৎসাতেই আর তাদের চোখ ভালো হয়নি।

আরও পড়ুন-

চোখ হারানোর ঘটনায় ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়

‘ভুল চিকিৎসায় ২০ জনের চোখ নষ্ট, দায় এড়াতে পারে না মন্ত্রণালয়’

চোখ হারানো ১৭ জনকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার চুয়াডাঙ্গা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর