Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জেলার সোহেল রানার বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত শুরু


১২ নভেম্বর ২০১৮ ২১:৩২

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

ভৈরব:  প্রায় অর্ধকোটি টাকা ও মাদক নিয়ে আটক চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

গত ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন। দুপুর পৌনে ১টার দিকে ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে পৌঁছলে রেলওয়ে পুলিশ একটি কেবিনে তল্লাশি চালায়। এ সময় তার লাগেজে ১২ বোতল ফেনসিডিল ও নগদ ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে আলাদা দুইটি মামলা করে। তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১২ নভেম্বর) সেই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব মনিরুল আলমের নেতৃত্বে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ভৈরবে যান। সেখানে সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ন সচিব কারা সুরক্ষা বিভাগ সৈয়দ বেলাল হোসেন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্ণেল ইকবাল হাসান ও  উপ-সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন মাদক-২ কারা সুরক্ষা বিভাগ ।

কমিটির প্রধান মনিরুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, বিভিন্ন মানুষের সাক্ষ্য নিতে শুরু করেছেন তারা। তবে কতদিনে তদন্ত কমিটি সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেবে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেন নি। মনিরুল আলম বলেন, যেহেতু সোহেল রানা বিশ্বাস সরকারি কর্মকর্তা সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করবেন তারা।

ভৈরবে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিকেলে তদন্ত কমিটি কিশোরগঞ্জ কারাগারে যায়। সেখানে সোহেল রানা বিশ্বাসের জবানবন্দী নেবেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এরপর তার কর্মস্থল চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবে তদন্ত কমিটি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে মাদক মামলায় সোহেল রানাকে দুইদিনের রিমান্ডে নেয় ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশ। সেখানে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের একটি সূত্র।

বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক ও মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সুরুজ্জামান সরকার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল রানা তাঁর বিভিন্ন অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি নিজে একজন মাদকসেবী, কারাগারের অধিকাংশ দায়িত্বপ্রাপ্তরাও মাদক সেবনে জড়িত রয়েছে। জেলার সোহেল রানা, কারারক্ষীসহ কারাগারের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা খাদ্য সরবরাহ পিকআপ ভ্যানে করে আসামিদের কাছে ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য বন্দীদের কাছে পৌঁছে দিত। এছাড়াও বন্দীদের সাথে স্বজনদের দেখা করা, মোবাইলে কথা বলা,ক্যান্টিনের খাবার বিক্রির টাকা এবং বন্দীদেরকে জিম্মি করে বিভিন্ন কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করা হতো। টাকা দিলে সশ্রম কারাদণ্ড হয়ে যেত বিনাশ্রম আর টাকা না দিলে বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়ে যেত সশ্রম। অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে বন্দীদের রাখা হতো হাসপাতালের বেডে। অবৈধ উপায়ে উপার্জন করা এসব অর্থ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা হতো বলেও জানিয়েছেন সোহেল রানা।

জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের কাছ থেকে যে টাকাগুলো ট্রেন থেকে জব্দ করা হয়েছিল সেগুলো মাসশেষে তার ভাগের অর্থ বলে জানান তিনি। এগুলো নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথেই ধরা পড়েন পুলিশের হাতে।

সোহেল রানা বিশ্বাস ২০০০ সালে ডেপুটি জেলার হিসাবে টাঙ্গাইলে যোগ দেন। পরে তিনি একই পদে বদলী হয়ে চট্টগ্রাম, যশোর ও রংপুরে দায়িত্ব পালন করেন । ২০০৯ সালে তিনি রংপুরে ডেপুটি জেলার হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে জেলার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বদলী হয়ে সাতক্ষীরায় জেলার হিসেবে যোগ দেন। একই পদে সিলেট, খাগড়াছড়ি, চুয়াডাঙ্গা,নরসিংদী ও সর্বশেষ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিজ্ঞাপন

দায়িত্ব পালনকালে প্রতিটি জেলায় তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

সারাবাংলা/এসএমএন

জেলার সোহেল রানা সোহেল রানা বিশ্বাস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর