খালেদা জিয়ার দুই মামলায় চার্জ শুনানি ১৩ ডিসেম্বর
১৩ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৫৩
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: মানহানির দুই মামলায় আগামী ১৩ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চার্জগঠনের শুনানি নেবেন আদালত।
আসামিপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর নতুন এই তারিখ ঠিক করে দেন। আদেশে বিচারক উল্লেখ করেছেন, শেষবারের মতো সময় মঞ্জুর করা হলো।
পুরান ঢাকার বকশিবাজার আদালতে এদিন (মঙ্গলবার) খালেদা জিয়ার উপস্থিতি ও চার্জ শুনানির জন্য দিন ঠিক ছিল। মানহানির এই দুই মামলায় গত ৩১ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ থেকে জামিন পেলেও অন্য মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন বলে আদালতকে জানানো হয়। তার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার এই যুক্তিতে চার্জ শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের চেয়ে আবেদন করেন।
এর আগে গত ৫ জুলাই যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার মামলায় মহানগর হাকিম আহসান হাবিব ও ভুয়া জন্মদিন পালনের মামলায় খুরশিদ আলমের আদালত জামিন না মঞ্জুর করেন।
মামলা দু’টির অভিযোগে বলা হয়, ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বেগম খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন প্রসেঙ্গ ১৯৯৭ সালে ১৯ ও ২২ আগস্ট দুইটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ম্যাট্টিক পরীক্ষার মার্ক শিট অনুযায়ী, তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৯১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট; তার কাবিননামায় জন্মদিন উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট; সর্বশেষ ২০০১ সালে খালেদা জিয়া মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট (এমআরপি) সেখানে তার জন্মদিন উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে তার ৫টি জন্মদিন পাওয়া যায়। তবে কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিলের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি ৫টি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী- জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ উৎসব করে জন্মদিন উদযাপন করে আসছেন। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য তিনি ওইদিন জন্মদিন উদযাপন করেন।
রাজধানীর তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান ২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়া সংক্রান্ত মামলার প্রতিবেদন জমা দেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রী পরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা প্রকাশ্য ও আত্মস্বীকৃত পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন- সেই জামায়াত, ছাত্রশিবির, আলবদর ও আল-শামস সদস্যদের মন্ত্রী ও এমপি বানান। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে খালেদা জিয়া সরকারের মন্ত্রিত্বপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালে মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি-গাড়িতে ব্যবহার করেছেন।
“বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব প্রদান করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকা ওই স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত করেছেন। অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতির প্রদানের সুপারিশ করা হলো।” উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এ বি সিদ্দিকী ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে মানহানির মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
সারাবাংলা/এআই/এটি
খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালন মানহানির দুই মামলা যুদ্ধাপরাধী