প্যারিসের পথে মিললো সিংহের বাচ্চা!
১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:৫৪
।। বিচিত্রা ডেস্ক ।।
‘অমুকে একটা বাঘের বাচ্চা!’ ‘তমুকে তো সিংহের বাচ্চার মতো কাজ করেছে!’
এ ধরনের কথা আমাদের আশপাশে প্রায়ই শোনা যায়। শুধু তাই নয়, এমন কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করে থাকে সবাই। তবে মজার বিষয় হলো— সাহসিকতার উপমা হিসেবে ‘বাঘের বাচ্চা’ বা ‘সিংহের বাচ্চা’র এমন আকছার ব্যবহার প্রচলিত থাকলেও সত্যিকার অর্থে মনুষ্য সমাজে একটি বাঘ বা সিংহের বাচ্চা কিন্তু একেবারেই অসহায়। এসব শাবকরা এতই নিরীহ যে ডাকলে ‘ম্যাঁও’-এর চেয়ে বেশি কিছু শোনা যায় না!
তবে হ্যাঁ, ‘ম্যাঁও’ ডাকলেও এরা কিন্তু সত্যিকারের শ্বাপদেরই শিশু। ফলে হিংস্রতা কিন্তু এদের স্বভাবেরই অংশ। তারপরও নিজেদের ভেতরকার সেই হিংস্রতাকে তারা যতদিন বুঝতে পারে না, ততদিন পর্যন্ত তারাও বিড়াল ছানার মতোই।
এরকমই একটি ছানা সিংহকে পাওয়া গেছে প্যারিসের পথে। শিল্প-সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করতে যে সে আসেনি— সেটা তো নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। তাহলে এই শ্বাপদ ছানা আসলে করছিলটা কী?
প্যারিসের অভিজাত বাজার এলাকা চ্যামপস-অ্যালিসে এলাকায় সোমবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় একটা চটকদার গাড়িতে দেখা পাওয়া যায় এই সিংহের ছানার। পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, সম্ভবত একে কেউ পোষা প্রাণী হিসেবে পালত।
পুলিশের তল্লাশির সময় একটা ভাড়া করা ল্যামবোরগিনি গাড়ির ভেতরে পাওয়া যায় এই শাবকের অস্তিত্ব। এরপর আর কী, গাড়ির চালক যথারীতি শ্রীঘরে। এখনও তাকে সেখানেই রাখা হয়েছে। আর ছানা সিংহটিকে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে।
প্যারিসের এখানে-ওখানে এমন অনিরাপদ স্থানে সিংহ শাবকের দেখা পাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এই তো গেল অক্টোবরেই প্যারিসের উপকণ্ঠে পাওয়া গিয়েছিল ছয় মাস বয়সী এক সিংহ শাবক। এর মালিককেও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সেই মামলার শুনানি যখন চলছিল, তখনই আলোচনায় উঠে আসে— লোকালয়েও সিংহ শাবকের সন্ধান পাওয়া কোনো বিছিন্ন বিষয় নয়। এই সূত্র ধরে তদন্তকারী সংস্থাগুলোও শহরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা আরও তিন সিংহ শাবকের সন্ধানে ব্যস্ত।
সে ঘটনার পরপরই ফ্রান্সের আরেকটি শহরে এক গ্যারেজে পাওয়া যায় আরও একটি সিংহের ছানা। সেটার বয়স ছিল এক কি দুই মাস। এখন সেটা পশুদের কল্যাণে কাজ করা একটি বিশেষ সংস্থার রক্ষণাবেক্ষণে আছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘লোক দেখানো’র প্রবণতা থেকেই কেউ কেউ নিজেদের ঘরে সিংহ শাবক রাখার মানসিকতা লালন করেন। আর তাদের তুষ্ট করতেই অবৈধভাবে এসব শাবক সংগ্রহকারীরাও সক্রিয়। একেকটি শাবক ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত দামেও বিক্রি হয়ে থাকে। যদিও ফ্রান্সের আইনে স্পষ্টভাবেই বলা আছে, সবার মনে রাখা দরকার, বন্যপ্রাণীরা কোনোভাবেই গৃহপালিত নয় কিংবা তারা খেলার বস্তুও নয়। বরং এসব প্রাণীকে অবৈধভাবে কেউ রাখতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এমএ/টিআর