Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি ২০ দলের


১৫ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:৪৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুমকি দেন জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম।

তিনি বলেন, ‘মনোনায়ন ফরম জমা দেওয়ার সময় কোনো মিছিল যেন না হয়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গত পরশু (১৩ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন পুলিশের মহাপরিচালককে (আইজিপি) নির্দেশ দিয়েছে। এ নির্দেশের পর গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মনোনয়ন ফরম জমা দিতে আসা নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ বিনা উসকানিতে হামলা চালায়। এতে নারী কর্মীসহ বিএনপির ৬০/৭০ জন মারাত্মক আহত হন।’

অলি বলেন, পুলিশ খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়ন ফরম জমা দিতে যাওয়া তার  উপদেষ্টা বগুড়ার সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, দলের গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক আনিসুজ্জামান খান বাবু, খুলনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খানসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে।

‘এ ঘটনার পর পুলিশ তাণ্ডবে যখন কার্যলয় জনশূন্য, তখন হেলমেটধারী একদল যুবক এসে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই হেলমেট বাহিনীই নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলনকারী কিশোর ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল এবং কর্তব্যরত সাংবাদিকদেরও মারপিট করেছিল। গাড়িতে আগুন দেওয়ার যে ছবি পাওয়া গেছে, সেই ছবির যুবক ছাত্রলীগকর্মী বলে অনেকেই চিহ্নিত করেছেন,’— বলেন কর্নেল (অব.) অলি।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা কয়েকটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন জাতির সামনে উত্থাপন করতে চাই। মাত্র ক’দিন আগে ক্ষমতাসীন দল কয়েকদিন ধরে চার হাজারেরও বেশি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে। মিছিল করে প্রার্থীরা এসেছে। কেউ কেউ হাতি নিয়ে এসেছে এবং ঢাক-ঢোল বাজিয়ে এসেছে অনেকেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তখন কোনো নির্দেশ জারি করেনি। প্রশাসন, পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি।

তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলে। এই কি তার নমুনা? ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী, এমপি-মন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে কয়েক মাস ধরে সরকারি খরচে নৌকার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে, মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট তাকে জামিন দিলেও সরকারি প্রভাবে আদালত তাকে জামিন দেয়নি।

২০ দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, ‘রাজতন্ত্র কিম্বা স্বৈরাচারী রাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক দেশে কোনো রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য মিডিয়ায় প্রকাশ কিংবা প্রচার করা যাবে না— এমন দৃষ্টান্ত আমাদের জানা নেই। অথচ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তৃতা-বিবৃতি প্রচার ও প্রকাশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের ফলে নির্বাচনি প্রচারণায় তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারছেন না। আসন্ন নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের কথা শোনার অধিকার থেকে দেশবাসীকে বঞ্চিত করা ও নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ‘

তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশ তামিল করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রথম খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের এক দিন আগে ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ধার্য করেছিল। এই নিয়ে প্রতিবাদ হওয়ায় তা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ ডিসেম্বর, অর্থাৎ ইংরেজি নববর্ষের মাত্র একদিন আগে। মূল কথা, সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন চায় না, কোনো বিদেশি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক আসুক। তারা এটাও চায় না যে, দেশে যেসব বিদেশি দূতাবাস আছে, তারা কোনো ভূমিকা পালন করার সুযোগ পায়।

তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন, নির্বাচনি তফসীল ঘোষণার পর কোনো রাজনৈতিক মামলা দেওয়া যাবে না, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হবে না এবং গায়েবি ও মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো— তিনি এ কথা বলার পরও শত শত রাজনৈতিক ও গায়েবি মামলা হয়েছে এবং হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে আসামি করে ঘর-বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে।

অলি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা থাকার পর এখনও সরকার মনোনীত প্রতিনিধিরা বহাল তবিয়তে আছেন। নির্বাচন কমিশন তাদেরকে অবিলম্বে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে দেওযার পদক্ষেপ নেন। এগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে শুধু অন্তরায় নয়, প্রচণ্ড বাধা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব এবং সেক্ষেত্রে ২০ দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না— সে বিষয়ে ২০ দল যথাসময়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জোট সমন্বয়কারী বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান, জামায়াত নেতা আব্দুল হালিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন-

‘শেখ হাসিনার জন্য আইন প্রযোজ্য নয়, তাই নিশ্চুপ ইসি’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

২০ দলীয় জোট বিএনপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৪০

সম্পর্কিত খবর