ব্যতিক্রমী শস্য উৎপাদনে বিশেষ উদ্যোগ
১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:১১
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ব্যতিক্রমী শস্য উৎপাদনের বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ডাল, তেল এবং মসলাজাতীয় অপ্রধান শস্য উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। এজন্য ‘দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ উচ্চমূল্যের অপ্রধান শস্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কর্মসূচি’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ২০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দয়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রস্তাব পাওয়ার পর অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৪ জুন প্রকল্পটি ওপর মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদনের সুপারিশ দেওয়া হয়। এখন কার্যক্রম বিভাগের একনেক অনুবিভাগে প্রকল্পটি প্রস্তুত রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পর এটি অনুমোদন পেতে পারে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ২০০৫ সালের জুলাই হতে ২০০৯ সালের জুনে ২৬টি জেলার ২০৪টি উপজেলায় প্রকল্পের প্রথম পর্যায় এবং প্রকল্প এলাকা সম্প্রসারিত করে ৬৪টি জেলার ২৫৬টি উপজেলায় মোট ৬০ কোটি ৯৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালের জুলাই হতে ২০১৬ সালের জুনে প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়ন করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নকালে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ এবং বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি সমাপ্তি মূল্যায়নের সুপারিশগুলোর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- অপ্রধান শস্যচাষের জন্য প্রকৃত স্থান নির্বাচন, ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও বর্গচাষীদের সমন্বয়ে দল গঠন, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে প্রকল্পের সুফলভোগীদের পুঁজি গঠন, অপ্রধান শস্য চাষে সুফলভোগীদের সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করা এবং অপ্রধান শস্য চাষের যথোপযুক্ত প্রযুক্তি সরবরাহ করা হবে।
সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ সূত্র জানায়, দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যান্য কৌশলের সঙ্গে কৃষির বহুমুখীকরণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গ্রামীণ উন্নয়ন কৌশল হিসাবে দরিদ্র জনগণের পুঁজি গঠন, প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণোত্তর সহায়তা দেওয়া, সচেতনতা বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আধুনিক টেকসই ও যথাযথ প্রযুক্তি সরবরাহের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটির আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র কৃষকদের সংগঠিত করে অপ্রধান শস্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া, অপ্রধান শস্যচাষের যথোপযুক্ত প্রযুক্তি সরবরাহ, প্রক্ষিণোত্তর ঋণ সহায়তা দেওয়া এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে সহায়তা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান বলেন, ‘প্রকল্পটির আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র কৃষকদের সংগঠিত করে অপ্রধান শস্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া, অপ্রধান শস্য চাষের যথোপযুক্ত প্রযুক্তি সরবরাহ, প্রশিক্ষণোত্তর ঋণ সহায়তা এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে সহায়তা দেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/জেজে/এমও