Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নেই ট্রাক টার্মিনাল, হিলি স্থলবন্দরে যানজটের ভোগান্তি


১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:৩০

।। সোহেল রানা, লোকাল করেসপন্ডেন্ট ।।

হিলি: দেশের উত্তরাঞ্চলে মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে ১৯৮৬ সালে তৈরি হয়েছিল হিলি স্থলবন্দর। বর্তমানে সরকারের বেঁধে দেওয়া রাজস্ব আয়ের চেয়েও তিন গুণ বেশি রাজস্ব দিতে সক্ষম হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে আয় বাড়লেও বন্দরের সেই পুরনো অবকাঠামোতে তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি, অন্যদিকে আজও বন্দরে গড়ে ওঠেনি কোনো ট্রাক ট্রার্মিনাল। এ কারণে যেখানে-সেখানে ট্রাক পার্কিংয়ের কারণে ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা পড়েন নানা অসুবিধায়। ক্রমশ এ নিয়ে বাড়ছে ভোগান্তি।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, প্রথম দিকে এ বন্দরের আমদানি-রফতানি ভালো না হলেও বর্তমানে স্থল বন্দরটিতে প্রতিদিন ১৭০ থেকে ২০০টি ট্রাকে পাথর, চাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, খৈলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে রাইস বেন্ড, ঝুট কাপড় রফতানি হয়ে থাকে ভারতে। সড়ক ও রেল যোগাযোগ ভালো হওয়ায় কারণে এ বন্দরটি অল্প সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিসেবে পরিচিত লাভ করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাক আসে হিলি স্থলবন্দর এলাকায়। এসব ট্রাক রাখার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় বন্দর এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। আর এতে করে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।

এছাড়াও এসব মালবোঝাই ট্রাকের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় পথচারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের। বন্দরের এই রাস্তা দিয়ে উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী নিয়ে যেতে হয়। যে কারণে যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদেরও।

বন্দরের ব্যবসায়ীদের দাবি, ভারত হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট গেট থেকে পানামা পোর্ট পর্যন্ত ৫০০ গজ রাস্তাটি প্রশস্ত ও একটি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে কমবে যানজট।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা থেকে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য নিতে আসা একজন ট্রাক ডাইভার বলেন, ‘বন্দরের কোনো নির্দিষ্ট ট্রাক টার্মিনাল নেই, তাই আমরা রাস্তার পাশে ট্রাক দাঁড় করায়। এখন যতক্ষণ আমাদের পানামা পোর্টের ভেতর মাল নিতে যাওয়ার অনুমতি না মিলবে ততক্ষণ ট্রাক নিয়ে রাস্তার পাশে এভাবে আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এটা আমাদের জন্যও ভোগান্তির।’

রংপুর থেকে পণ্য নিতে আসা আরেক ট্রাক ডাইভার মজনু মিয়া বলেন, ‘এখানে ট্রাক টার্মিনাল নাই। যে কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমরা রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করায়ে রাখি। রাতের আঁধারে চলতি ট্রাক এসে যদি ধাক্কা দেয় তাহলে তো আমরাও শেষ। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে অনুরোধ করবো দ্রুত একটি ট্রাক টার্মিনাল স্থাপনের।’

স্থানীয় তাছির উদ্দিন বাপ্পী নামে একজন বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিয়িত যানজটের কারণে কষ্ট করতে হয়। হিলি স্থলবন্দরের একটি ট্রাক টার্মিনাল হলে এই ভোগান্তি থেকে আমরা মুক্তি পাবো।’

হিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর ইসলাম শাহীন বলেন, ‘জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে বন্দরের ভিতর পর্যন্ত রাস্তাটি প্রস্তুত ও একটি ট্রাক ট্রামিনাল নির্মাণ করা হলে এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি আরও বৃদ্ধি পাবে। আমরাও ব্যবসা-বাণিজ্য করে একটু শান্তি পাবো। তাই আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করবো আমাদের এই হিলি স্থলবন্দরের দিকে একটু নজর দেওয়ার জন্য। যাতে আমরা ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারি পাশাপাশি জনগণও ভোগান্তি থেকে মুক্তি পায়।’

হিলি স্থলবন্দরের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘সারাক্ষণ যানজটের কারণে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।’ পথচারীরা যাতে ভোগান্তিতে না পরে সেজন্য অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য রাখার কথাও জানান তিনি।

সারাবাংলা/এমও

ট্রাক টার্মিনাল যানজট হিলি স্থলবন্দর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর