হত্যার একদিন পর মিলল মোটরসাইকেল, রক্তমাখা শার্ট-গেঞ্জি
১৭ নভেম্বর ২০১৮ ১৮:০৭
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
বগুড়া: বগুড়ায় বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নাঈম ইসলামের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হলেও তাকে নৃশংসভাবে খুন করার কারণ এখনও জানা যায়নি। এছাড়া দুটি রক্তমাখা পোশাকও উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকারীদের পোশাকে রক্ত লেগে যাওয়ায় তারা পোশাকদুটি ফেলে গেছে।
এর আগে শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে সারিয়াকান্দি উপজেলা সদরের কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকায় নাঈমের গলা কাট ও পুড়ে যাওয়া লাশ পাওয়া যায়। আর শনিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকায় নাঈমের মোটরসাইকেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া সকালেই সারিয়াকান্দি বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে রক্তমাখা শার্ট ও গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়।
একদিন পেরিয়ে গেলেও কারা, কেন কিংবা কোথায় নাঈমকে হত্যা করা হয়েছে এসব প্রশ্নের উত্তর পায়নি পুলিশ। লাশ সারিয়াকন্দি উপজেলা সদর এলাকায় পাওয়া গেলেও পুলিশের ধারণা অন্য কোথাও তাকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তকারীরা এখন সেই ঘটনাস্থল খুঁজতে তল্লশি চালাচ্ছেন।
গলা কেটে হত্যার পর মুখমন্ডলসহ শরীরের একাংশ পুড়িয়ে দিয়ে হত্যার এই ঘটনায় পুলিশ নাঈমের পাঁচ বন্ধুকে গ্রেফতার দেখিয়েছে। এরা হলেন -শ্রাবন ইসলাম বিশু, শিহাব বাবু, মনিরুজ্জামান মনির, অন্তর ও আতিক।
লাশ উদ্ধারের পর সারিয়াকান্দি এলাকায় ঘোরাফেরার সময় এই পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। তবে তাদের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ধরা পড়ায় এবং একজনের হাতে ক্ষতচিহ্ন থাকায় পুলিশ পরে তাদের গ্রেফতার করে।
গাবতলি-সারিয়াকান্দি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কুমার পাল জানান, পুর্ব বিরোধসহ প্রেম ঘটিত কোনো বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিন জানান, শনিবার সকালে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকায় নাঈমের মটর সাইকেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া সারিয়াকান্দি বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া রক্তমাখা শার্ট ও গেঞ্জির যে কোনো একটি হত্যাকারীদের বলে হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে হত্যার পর রক্ত লেগে যাওয়ায় সেগুলো ফেলে দিয়েছিল খুনিরা। তবে এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করলেও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন নাঈমের সহপাঠী সাব্বিরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তিনি এখনও পলাতক। গ্রেফতারদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান ওসি।
বগুড়ার বেসরকারি পলিটেনিক বিআইআইটির টেক্সটাইল বিভাগের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈমের বাড়ি বগুড়ার গাবতলি উপজেলার মরিয়া গ্রামে। শুক্রবার সকালে সারিয়াকান্দি উপজেলা সদরের কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকায় লাশ পাওয়া যায়। পরে তার মা নাজমা বেগম ছেলের লাশ সনাক্ত করেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে নাঈম তার এক বন্ধুর সঙ্গে মটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ওই দিন রাতে তার মোবাইল ফোন থেকে মায়ের কাছে দুইটি বার্তা আসে। তার একটিতে বলা হয় ‘টেনশন করো না, সকালে বাড়ি ফিরবো।’ অন্যটিতে বলা হয়, ‘তোর ছেলেকে যদি ফিরে পেতে চাস, তাহলে সোনামুখিতে (একটি এলাকার নাম) আয়।’
সারাবাংলা/এসএমএন