।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: সারাবিশ্বে চলমান হ্যাশট্যাগ মিটু (#Me_too) আন্দোলনে একাত্মতা জানালেন বাংলাদেশের নারী সাংবাদিকরা। তারা বলছেন, এই আন্দোলন আমাদের চিন্তার ধরনে বদল এনেছে। এ ধরনের যৌন হয়রানি বন্ধে তারা যথাযথ আইন প্রণয়ন ও তার প্রয়োগের ওপর জোর দেন। পাশাপাশি পুরুষদেরও এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনুর নেতৃত্বের রোববার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমবেত হন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের নারী ও পুরুষ কর্মীরা।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মী গীতি আরা নাসরিন বলেন, ‘#মিটু আন্দোলন আমাদের চিন্তার বদল এনেছে। আগে আমরা যে কথাগুলো জানতাম কিন্তু বলতে পারতাম না, তা স্পস্ট করছে, সামনে আনছে। এখন যৌন নিপীড়ন করতে একটু হলেও কেউ ভয় পাবে। এটা যত জোরালো হবে, যত মানুষ জানবে, এই যৌন নিপীড়নকারীরা তত ভয় পাবে। আমরা যে বলতে পারছি, আমাদের যে চিন্তার বদল আসছে, এটাই যৌন নিপীড়ন বদলে কাজ করবে।’
মানববন্ধনে নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা, নারী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মমতাজ বিলকিস বানু, সাধারণ সম্পাদক শারমিন রিনভি, আইরিন নিয়াজী মান্নাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, যৌন নিপীড়ন বন্ধে আইন প্রণয়ন ও এর প্রয়োগ জরুরি। পাশাপাশি নারীদের যৌন নির্যাতন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং নিপীড়িত হলে তা প্রকাশ করার পাশাপাশি পুরুষদেরও এই বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। মেয়ে সন্তানদের নিজেদের রক্ষা করার বিষয়ে শিক্ষিত করার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে সন্তানদেরও নারীকে সম্মান করার বিষয়ে শেখানোর কথা বলেন তারা।
চলমান মি টু আন্দোলনে মুখ খোলা ৯ জন নারীর একজন মুশফিকা লাইজু উপস্থিত ছিলেন মানববন্ধনে। নন্দিত নাট্যকার সেলিম আল দীনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন তিনি।
লাইজু বলেন, ৩১ বছর আগের এই ঘটনা প্রকাশের পরে আমি অনেক রকম প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছি। অনেকে যেমন আমাকে দোষারোপ করেছেন, তেমনি অনেকে আমাকে সম্মানও জানিয়েছেন। কিন্তু আমি কারও কথা ভেবে বা কারও সঙ্গে আলোচনা করে এই অভিযোগ তুলিনি। আমার মনে হয়েছে, আমি এখন একজন পরিণত মানুষ, আমার নিজের অভিজ্ঞতা জানানোর অধিকার আছে।
মানবন্ধন থেকে যৌন নিপীড়নের ঘটনা প্রকাশ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা আশা করেন, এসব ঘটনা বিচারে সরকার প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখবে।
সারাবাংলা/এমএ/টিআর