কালাইয়ে নবান্নের মাছের মেলা
১৮ নভেম্বর ২০১৮ ২০:৩৭
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
জয়পুরহাট: নবান্ন উপলক্ষে প্রতিবছরই জয়পুরহাটের কালাইয়ে আয়োজন করা হয় বিশেষ এক মেলার। অন্য সব মেলার মতো এখানে মেলে না মনোহরি সামগ্রী। তবে অন্য সব মেলার মতো এই মেলাতেও থাকে সাবিবদ্ধ দোকান, ক্রেতাদের হাঁকডাক। দোকানিদের সামনে সাজানো থাকে মাছ।
কারণ এটি মাছেরই মেলা।
রুই, কাতলা, আইড, বোয়াল, চিতল, সিলভার কার্পসহ নানা জাতের মাছ নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। আর আগ্রহী ক্রেতারা সেখান থেকে বেছে নেন পছন্দের মাছটি।
এবছরও রোববার (১৮ নভেম্বর) কালাইয়ের পাঁচশিরা বাজারে বসেছিল দিনব্যাপী মাছের মেলা। এক কেজি থেকে শুরু করে ১৫ কেজি ওজনের মাছ ছিল মেলায়। ক্রেতারাও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন এসব মাছ।
মূলত নবান্ন উৎসবেকে ঘিরেই প্রতি বছর এই মাছের মেলা বসে। পাঁচশিরা মাছ বাজারে উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, খোশালিপুর, হাটশর হারুঞ্জ, পুনট, বেগুন গ্রাম, পাঁচগ্রামসহ ২৫ থেকে ৩০টি গ্রামের মানুষের ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসবের আয়োজন পূর্ণতা পায় এই মাছের মেলা থেকে কেনা মাছ দিয়ে।
সকালে বেশ বড় একটি মাছ মাথার ওপর তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের মাছ বিক্রেতা গোলাম রব্বনী। তিনি ১৫ কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছটির দাম হাঁকেন ১১ হাজার টাকা।
মেলায় ২০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিগহেড ও সিলভার কার্পও বিক্রি হয়েছে। রুই-কাতলার দাম ছিল ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি।
মাছ কিনতে এসেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম, অবসর প্রাপ্ত উপ-খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান, বেলাল হোসেন, সুমীর কর্মকার, দুলাল কর্মকার, আবু তালেব সামসুল আলমসহ অসংখ্য মানুষ। প্রচুর মাছের সরবরাহ থাকলেও দাম কিছুটা বেশি বলে অভিযোগ করেন তারা।
তবে অনীল, তামা, বিমল, রেজাউল ইসলামসহ কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বেচা কেনা তুলনামূলক কম। দাম বেশি রাখছেন না বলেও দাবি করেন তারা।
মাছ চাষী মো. লেবু, আব্দুল মাবুদ, জালাল, মাহমুদ হাসান ও গোলাম রব্বানী জানান, এ মেলাকে কেন্দ্র করে তারা প্রায় এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে চাষ করেন। সেই মাছগুলোই মেলায় বিক্রি করেন তারা।
কালাই পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কে বাড়ি শিখা রানী সাহা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাছের মেলায় এসেছেন। জানান, প্রায় প্রতি বছর এ মেলায় আসেন তিনি। তবে এবার তার সঙ্গে এসেছেন ধামইরহাট থেকে আসা বড় ভাইয়ের স্ত্রী অপর্ণা কর্মকার। তারা দুইজন মিলে দরদাম করে ৬৫০ টাকা কেজি দরে ৪ কেজি ৩০০গ্রাম ওজনের একটি কাতলা কিনেছেন দুই হাজার ৮০০ টাকায়। দুজনেই বললেন, এবারও মাছে-ভাতে নবান্ন উৎসব পালন করবেন।
সারাবাংলা/এসএমএন