Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা স্থগিত চেয়ে খালেদা জিয়ার আপিল


১৯ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:০৮

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া সাজা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার জামিনেরও আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ নভেম্বর) আপিলের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

তিনি জানান, আজ অথবা আগামীকাল চেম্বার আদালতে বিষয়টি শুনানি হতে পারে।

গত ৩০ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া পাঁচ বছরের সাজা বৃদ্ধি করে ১০ বছর সাজা দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন,বেগম জিয়াকে হাইকোর্ট যে সাজা দিয়েছে তা স্থগিত চাওয়া হয়েছে এবং তার জামিন চাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত বেগম খালেদা জিয়াকে পাচঁ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করলে হাইকোর্ট সাজা বৃদ্ধি করে ১০ বছর সাজা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এ রায়টি শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, এই পাক-ভারত উপমহাদেশে এই প্রথম কোনো মামলায় নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এটা নজিরবিহীন। যা অন্যকোন মামলার ক্ষেত্রে হয়নি। এমনকি ২০১৪,১৫,১৬,১৭ সালের মামলাগুলো এখন পর্যন্ত শুনানি তো দূরের কথা তালিকাতেও আসেনি।

তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে নির্বাচন থেকে দুরে রাখা সরকারের যে একটা উদ্দেশ্য ছিল তারই অংশ হিসেবে বেগম জিয়ার মামলাটা তাড়াতাড়ি করে শুনানি করা হয়েছে।

গত ৩০ অক্টোবর মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা পাচঁ বছর বৃদ্ধি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

বিজ্ঞাপন

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই দিনই তাকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুজন হলেন-মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

পলাতক তিনজন হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন।

২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ১২ মার্চ বেশ কয়েকটি শর্তে খালেদা জিয়াকে জামিন দেন হাইকোর্ট।

এদিকে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। সব মিলিয়ে এ মামলায় তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের ওপর শুনানি সমাপ্তি করে রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করে দেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। এরপর এ বিচারকের ওপর অনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে খালেদা জিয়া। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটি স্থানান্তর করে বিশেষ জজ আদালত-৫ দেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত রায় দেন।

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহারে জানা যায়, ১৯৯১-৯৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন রমনা শাখার সোনালী ব্যাংকে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন, যার নম্বর ৫৪১৬। ওই হিসাবে ইউনাইটেড সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ডি ডি নম্বর ১৫৩৩৬৭৯৭০-তে ১৯৯১ সালের ৯ জুন ১২ লাখ ৫৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা তৎকালীন বাংলাদেশি মুদ্রায় চার কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা জমা হয়।

পরে খালেদা জিয়া বিভিন্ন সময়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন আসামির নামে ‘এফডিআর’ করে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে উত্তোলন করেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং ১০৯ ধারা ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২ নম্বর আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন।

সারাবাংলা/এজেডকে/একে

খালেদা জিয়া বিএনপি চেয়ারপারসন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর