ঢামেক হাসপাতালে এখনও ঝুলছে নির্বাচনি ব্যানার-ফেস্টুন
২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:৪৮
।। সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘নারায়ণগঞ্জ থেকে রোগী নিয়ে হাসপাতালে আইলাম (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল)। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম উল্টো চিত্র। সব জায়গায় দেখছি ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে, অথচ মেডিকেলের চারপাশ ব্যানার-পোস্টারে গিজগিজ করছে।’ —বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. মহিউদ্দিন।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ থেকে একজন রোগী নিয়ে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। রোগী নামিয়ে হাসপাতালের বাইরের খোলা জায়গায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি। এসময় হাসপাতালের চারপাশের নির্বাচনি ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুনের ছবি তুলতে গেলে এ প্রতিবেদককে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন তিনি।
কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্দেশ দিয়েছিল রাজধানীসহ সারাদেশের নির্বাচনি ব্যানার-ফেস্টুন-পোস্টারসহ সব প্রচারসামগ্রী অপসারণ করতে হবে। আর সে নির্দেশের শেষ দিন ছিল রোববার মধ্যরাত পর্যন্ত। কিন্তু নির্দেশের একদিন পার হয়ে গেলেও এখনও আগের মতোই ব্যানার-পোস্টার ঝুলতে দেখা গেছে ঢামেক হাসপাতালের চারপাশে। অথচ এদিন সকাল থেকে হাসপাতালের চারপাশের বিভিন্ন এলাকায় এসব নির্বাচনি পোস্টার-ব্যানার অপসারণ করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ টিম। কিন্তু তাদের কাউরে মেডিকেলে আসতে দেখা যায়নি।
অ্যাম্বুলেন্স চালক মহিউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাসপাতালে আসার সময় দেখলাম যাত্রাবাড়ি, শনির আখড়া এলাকাগুলোতে সিটি করপোরেশনের লোকজন ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে। কিন্তু এখানে তো একটাও ছেঁড়েনি। কেউ মনে হয় আসেও নাই। শুধু নির্বাচনকালীন সময় না, সারাবছর এ নিয়ম করা উচিত যেনো কেউ পোস্টার না লাগায় এখানে। তাহলে হাসপাতালটা সুন্দর লাগতো দেখতে।’
একই কথা বললেন ঢামেকের দেলোয়ার হোসেন নামের একজন এমএলএসএস। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল রাতেই তো মনে হয় পোস্টার উঠানোর সময় শেষ হয়ে গেছে। মেডিকেলের পোস্টার তো কেউ তোলেনি।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের মনির হোসেন বলেন, ‘দেখেন কি অবস্থা! পোস্টার মেরে আমাদের জানালাটাও বন্ধ করে দিয়েছে। বাইরের কিছুই দেখার উপায় নেই। শুনেছি গত রাতেই পোস্টার উঠানোর সময় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মেডিকেলের বাইরে- ভেতরের একটি পোস্টারও তুলতে দেখলাম না।’
প্রসঙ্গত ১৬ নভেম্বর ইসির এক নির্দেশনায় বলা হয় ১৮ নভেম্বর মধ্যরাতের মধ্যে সব ধরনের প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কথা বলা হয়। ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, মার্কেট, রাস্তা, যানবাহন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালসহ যেকোনো স্থাপনাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাদের নামে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেটসহ প্রচারসামগ্রী রয়েছে, তা নির্ধারিত সময়ে মধ্যে নামিয়ে ফেলতে হবে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী ঢামেক হাসপাতালের ব্যানার-ফেস্টুন-পোস্টার অপসারণ করার কথা। কিন্তু নির্দেশনার শেষ দিন অতিক্রম করে একদিন পার হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আলম মিয়া বলেন, ‘ব্যানার-ফেস্টুন তুলে ফেলার বিষয়ে আমার কাছে কোনো নির্দেশনা নেই। থাকলে অবশ্যই তুলে ফেলতাম। আর মেডিকেলের ভেতরেরগুলোতো মেডিকেল কর্তৃপক্ষই রঙ করার সময় তুলে ফেলে।’
এ বিষয়ে ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। তবে এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হবে। যদি এতেও তারা অপসারণ না করে তাহলে আমরাই সেগুলো অপসারণ করবো।’
সারাবাংলা/এসএইচ/এমও