চলছে শেষ দিনের সাক্ষাৎকার, সবাই আশাবাদী
২১ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:০৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগ্রহী প্রার্থীদের শেষ দিনের সাক্ষাৎকার নিচ্ছে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড।
বুধবার (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সাক্ষাৎকার গ্রহণের শেষ দিন ঢাকা ও ময়মনসিহংহ বিভাগের ৯৪টি সংসদীয় আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে আগ্রহী প্রায় ১ হাজার ২০০ সম্ভাব্য প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে।
সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দীন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা।
তাদের সঙ্গে যথারীতি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লন্ডন থেকে যুক্ত রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত তিন দিনের মতো আজও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলছেন। দিচ্ছেন নানা দিক নির্দেশনা। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে দলীয় ঐক্য ধরে রাখার ব্যাপারে সবাইকে সচেষ্ট থাকার কড়া নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ময়মনসিংহ ১ আসনে নির্বাচনে আগ্রহীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শেষ দিনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ অনুষ্ঠান। সাক্ষাৎকার দিয়ে বেরিয়ে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় সবার ক্ষেত্রে কমন প্রশ্নটা ছিল, কেন তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে?
এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরটাও প্রায় কমন। প্রত্যেকেই দলের প্রতি তাদের দীর্ঘ দিনের ত্যাগ, তীতিক্ষার কথা তুলে ধরেছেন এবং নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবার মনোনয়নকে বড় করে না দেখে মনোনয়ন কেনা, জমা দেওয়া এবং সাক্ষাৎকার বোর্ডে যাওয়ার যে আনন্দ, সেটি উপভোগ করার জন্য এ কর্মযজ্ঞে শরিক হয়েছেন।
মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৪ হাজার লোকের মধ্য থেকে ৩০০ জনকে বেছে নেওয়ার কঠিন কাজটা এখন চলছে। যারা মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাদের প্রত্যেকের কথাই গুরুত্বের সঙ্গে শোনা হচ্ছে।
‘কিন্তু সবাই তো মনোনয়ন পাবেন না। তাই সবাইকে একটি মেসেজ-ই দেওয়া হচ্ছে, মনোনয়ন না পেলে যেন কেউ দল থেকে দূরে সরে না যায়। আমি নিজেও মুন্সিগঞ্জ-২ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। আশা করি দল আমাকে মনোনীত করবে। যদি না করে, যাকেই ধানের শীষের প্রতীক দেওয়া হোক তার পক্ষে কাজ করব’— বলেন আবদুস সালাম আজাদ।
ময়মনসিংহ-৪ আসনে নির্বাচনে আগ্রহী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সারাবাংলাকে বলেন, ’আমার নির্বাচনী আসন থেকে তো অনেকেই মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এটাকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। এখন দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই সবাইকে কাজ করতে হবে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের বিষয়টি যদি বিবেচনায় আসে, তাহলে আমি মনোনয়ন পাব বলে আমার বিশ্বাস।’
গত রোববার (১৮ নভেম্বর) থেকে আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু করে বিএনপি। প্রথম দিন রংপুর-রাজশাহী, দ্বিতীয় দিন বরিশাল-খুলনা, তৃতীয় দিন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। বুধবার শেষ দিনে ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হচ্ছে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণের শেষ দিন গুলশান কার্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ভিড় করেছে। আসন সংখ্যার দিক থেকে সব চেয়ে বড় ঢাকা বিভাগ (ঢাকা-ময়মনসিংহ) আগ্রহী প্রার্থীর সংখ্যা যেমন বেশি, তেমনি কর্মী সমর্থকের সংখ্যাও বেশি।
এ কারণে গত দিন দিনের চেয়ে চতুর্থদিনে গুলশান কার্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক কর্মী সমর্থকের সমাবেশ ঘটেছে। তবে দলের কড়া নির্দেশের কারণে তারা মিছিল, স্লোগান ও হট্টগোল থেকে বিরত রয়েছেন।
গুলশান কার্যালয়ে সামনের সড়কের মাথায় অন্য দিনগুলোর মতোই রয়েছে পুলিশের ব্যারিকেড। স্থানীয় বাসিন্দাসহ সবাইকে প্রায় চেক করা হচ্ছে সেখানে। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাড়তি পুলিশও আনা হয়েছে গুলশান কার্যালয় এলাকায়।
সারাবাংলা/এজেড/জেএএম