প্রতীক বরাদ্দের আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড: ইসি
২১ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:৩৯
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সমান হবে বলে জানিয়েছনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
বুধবার (২১ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি সচিব বলেন, ‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসবো। এই সভা থেকে নির্বাচনের আগে-পরে ও ভোটের দিনের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু রাখতে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
সভা থেকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘এর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনপূর্ব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় স্থির করা, নির্বাচনি আইনের বিধান প্রতিপালনের পরিবেশ তৈরি করা, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করা। যাতে সকল প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় সমান সুযোগ পান। এ ছাড়া নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটরা যাতে নির্বিঘ্নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারেন—সেজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হবে।’
‘সভায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নারী ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নির্বিঘ্ন করা, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের নিরাপত্তা, নির্বাচনি সামগ্রীর কেন্দ্রে পৌঁছানোর নিরাপত্তা, নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিরাপত্তায় পুলিশ পাহারা দেওয়া, নির্বাচনের আগে, ভোটের দিন ও ভোট পরবর্তী সময়ের সার্বিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়গুলো নিয়েও বিশেষ সভায় নির্দেশনা থাকবে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অপর চার কমিশনার উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া ওই সভায় পুলিশের আইজি, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক ও পুলিশ সুপাররা (এসপি) উপস্থিত থাকবেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ নজর থাকবে। জঙ্গি চক্র যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না উঠতে পারে—এ বিষয়গুলোতেও আলাদা নির্দেশনা থাকবে। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সেনা প্রতিনিধিদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশেষ সভায় সেনা সদরের কোনো প্রতিনিধি থাকবে না, সেনা প্রতিনিধিদের প্রতীক বরাদ্ধের পর আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠকে ডাকা হবে। ওই সভাটি আগামী ১০ ডিসেম্বরের পরে অনুষ্ঠিত হবে।’
বিএনপির তরফে দাখিল করা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা সবাই কমিশনের নজরে আনছি। বিএনপি আজ যে চিঠি দিয়েছে সেটি নিয়ে কালকের কমিশন সভায় আলোচনা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।’
এ ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের নতুন করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দেবেন কি না প্রশ্নে সচিব বলেন, এ ধরনের কিছু নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ধর্মীয় সভা আয়োজনে বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়ে সচিব বলেন, ধর্মীয় সভা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়নি। আবেদন পাওয়া সাপেক্ষে রিটার্নিং অফিসার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সভার অনুমোদন দিতে পারে। তবে ধর্মীয় সভায় কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য রাখা যাবে না। এ ধরনের সভায় ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকবে। তবে আমরা রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশনা দিয়েছে, কোনোভাবেই কোনো দলীয় ব্যক্তিকে যেন তারা প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দেন।
উল্লেখ্য ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ ৯ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর।
সারাবাংলা/জিএস/এমআই