Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন, এদেশের মানুষ সুন্দর কাজ করতে পারে’


২২ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:২৭

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এ দেশটা সুন্দর এবং এখানকার মানুষ সুন্দর কাজ করতে পারে। এদেশের মানুষ যেকোনো কাজে খুব ভালো ফিনিশিং দিতে পারে। তাই আমরা চাই আমাদের দেশে আরো বেশি শিল্প গড়ে উঠুক।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার এন্ড লেদার গুডস্ ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো-ব্লিস’র এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমি খুব খুশী। আসার আগে আমি নিশ্চিত করেছি যাতে আমার হাতে আমাদের দেশের তৈরি ব্যাগ থাকে। সেটা আমি সাথে করে নিয়েই এসেছি। আমি যখন বিদেশে যাই সেখানেও এই ব্যাগ নিয়ে যাই। সবাইকে দেখিয়ে বলি, আমাদের দেশে এই জিনিস তৈরি হয়। জার্মান চ্যান্সেলর মার্কেলকে ওটা দেখিয়ে বলেছি, আপনাকে আমি গিফট দেবো। আমি আমাদের ব্যবসায়ী সাইফুল সাহেবকে বলেছিলাম, কয়েকটা সুন্দর ব্যাগ বেছে দেবেন আমি আমার পক্ষ থেকে তাকে গিফট দেবো। এটা জার্মান ব্র্যান্ড কিন্তু বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশ হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা এবং সবচেয়ে সুন্দর কাজ বাংলাদেশের মানুষ করতে পারে। আমাদের যারা লেবার, তাদের একটু ট্রেনিং দিলেই তারা খুব ভাল কাজ করতে পারে। বিশেষ করে নারীরা এ ব্যাপারে খুব পারদর্শী। তারা সুন্দর হাতের কাজ করে দিতে পারে।

এভাবে আমরা ব্র্যান্ডকে আরও নতুন মানে সুন্দর একটা চেহারা দিতে পারি এবং সৌন্দর্য বাড়াতে পারি। কাজেই আমরা চাই আমাদের দেশে এই শিল্প আরও গড়ে উঠুক। দেশি বিদেশি ব্র্যান্ড আসুক, বিনিয়োগ আসুক। এতে একদিকে যেমন আমাদের কর্মসংস্থান হবে। অপরদিকে যারা করবেন তারা খুব সস্তায় এখানে শ্রমিক পাবেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানটা এমন, যেখান থেকে সারা পৃথিবীতে যোগাযোগ করা যেতে পারে। সেই সুযোগটা আমাদের রয়েছে। এই সুযোগ আরো বাড়াতে এরই মধ্যে কক্সবাজারে যে এয়ারপোর্ট করে দিচ্ছি তা আন্তর্জাতিক মানের এবং সেখানে যাতে সম্প্রসারিত প্লেন বা এয়ারক্রাফট নামতে পারে সেটা মাথায় রেখে গড়ে তুলছি। যাতে করে বিদেশি ব্যবসায়ীরা আসতে পারেন। বাংলাদেশকে দেখতে পারেন, চিনতে পারেন, জানতে পারেন। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের ৮০ মাইল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবীতে আর কোথাও নাই। একমাত্র বাংলাদেশে আছে। কাজেই এটাও উপভোগ করতে পারবেন তারা। সেই সাথে আমরা দেশকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

দেশের উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ানোর দিকগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি বাণিজ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে আমি সবসময় মনে করি, আমাদের এক্সপোর্ট বাস্কেট বাড়াতে হবে। তার জন্য বিশেষ বাজেটও দিতে হবে। আমরা যদি একটু প্রণোদনা না দেই তাহলে ক্ষেত্রটাই সম্প্রসারিত হবে না। সেদিকে দৃষ্টি রেখে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কোন দেশের চাহিদা কি? কোন দেশে আমাদের কোন পণ্য বাজারজাত করতে পারি। তাহলেই বাজার সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে।

এতে উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থান ও এক্সপোর্টও বাড়বে। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন সুযোগ তৈরি হবে, আপনারা অনেক টাকার মালিক হতে পারবেন। সরকারি হিসাবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে আপনাদের সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।

আমাদের সরকার নিজেরা ব্যবসা করতে যাই না। কিন্তু ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা করার সুযোগটা সৃষ্টি করে দেই। সেটা আমরা আরও দেবো। এতে কোনো সন্দেহ নাই।

বিজ্ঞাপন

চামড়া শিল্পের সম্ভাবনা ও প্রসারতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এখন বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ড বাংলাদেশেই তৈরী হয়। সেটা আবার তারা তাদের দেশে গিয়ে ফিনিশিং করে মার্কেটে দিয়ে দেয়। কাজেই আমরা যাতে এগুলো আরও সুন্দরভাবে করতে পারি, সেদিকে দৃষ্টি দেবেন। এরজন্য যা কিছু সহযোগিতা দরকার আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আমরা তা করবো।

রাজশাহী এবং চট্টগ্রামে আরও দুইটি আধুনিক ট্যানারি শিল্প কারখানার পাশাপাশি চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য শিল্প নগরী গড়ে তোলারও ইচ্ছা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখন ইলেকশন সামনে। যদি আসতে পারি তখন করবো, আর যদি নাও আসতে পারি এটা বলে গেলাম, আপনারা যারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নিশ্চয়ই আপনারা এটা করিয়ে নেবেন, এটা আমি চাই। কারণ এটা আমার নিজেরই আইডিয়া। আমাকে কেউ বলে নাই। রাজশাহী বা চট্টগ্রামে করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বেশ কয়েক মাস আগে আমাদের সকল রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার যারা ছিল তাদেরকে ঢাকায় ডেকেছিলাম এবং তাদের কি কি করণীয় সে ব্যাপারে আমরা নির্দেশনা দিয়েছিলাম। সেখানে বলে দিয়েছি যে, একসময় আমাদের কূটনীতিটা পলিটিক্যাল ছিল। আর এখন এটা হয়ে গেছে ইকোনমিক্যাল। অর্থ্যাৎ অর্থনৈতিক কূটনৈতিকটাকেই আমরা এখন গুরুত্ব দিচ্ছি।

এছাড়া, ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ ও বিনিয়োগের জন্য সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন তিনি।

সারাবাংলা/এনআর/জেএএম

প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর