Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক উদ্যোগ: সিপিডি


২২ নভেম্বর ২০১৮ ১৫:২৬

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: বাংলাদেশে রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)’র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। একই সঙ্গে নির্বাচনী হলফনামায় দেয়া প্রার্থীদের সম্পদের তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে ঋণ খেলাপী ও কর ফাঁকিবাজদের তথ্যও জনগণের সামনে তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর ব্রাক ইন সেন্টারে ‘দ্যা লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিস রিপোর্ট-২০১৮’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। যাতে ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তা তৈরির দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়। অর্থনীতির কাঠামোগত রুপান্তর ও সরকারি নীতি সংস্কারের বিষয়েও বলা হয়।

দেশের রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের আধিক্যের কথা তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘নির্বাচনের ভেতরে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর উপস্থিতি যথেষ্ট দৃশ্যমান। রাজনীতিবিদদের চেয়েও হয়তো ব্যবসায়ী গোষ্ঠীরই তুলনামূলকভাবে দৃশ্যমান উপস্থিতি। ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এখন প্রয়োজন বোধ করছেন রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে। কারণ যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা তারা অনেক ক্ষেত্রে পেয়েছেন, সেটা একমাত্র রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য দ্বারাই সুরক্ষা করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘কর অবকাশ থেকে শুরু করে কোনো একটি লাইসেন্স বা নতুন একটি ব্যাংকের কথা বলেন, এগুলো বিশেষভাবে আনুকূল্যের ভিত্তিতে হয়েছে। সেজন্য তারা রাজনীতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এটাকে সুরক্ষা দিতে চান।’

বিজ্ঞাপন

দেবপ্রিয় বলেন, ‘আবার রাজনীতিবিদরাও এখন অনেক বেশি ব্যবসার দিকে যুক্ত হচ্ছেন। রাজনীতিবিদরাও এখন ব্যবসায়ী হয়ে যাচ্ছেন। রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা একে অপরের সমর্থনে কাজ করছেন। এবং নাগরিকরা কে রাজনীতিবিদ আর কে ব্যবসায়ী তা বুঝে উঠতে পারছে না। তাদের সামনে দৃশ্যমান হচ্ছে বাংলাদেশে এখন রাজনীতি সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক উদ্যোগ।’

‘নির্বাচনের আগে যারা হলফনামার ঘোষণা দিচ্ছে, সে হলফনামাগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দ্রুততার সাথে দেখে এর একটি মূল্যায়ন জনগণের সামনে দেবেন, যেটা নির্বাচন কমিশন বিবেচনার ভেতরে নেবেন। নির্বাচনের পরে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিবেন তখনই তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ ঘোষণা দিয়ে নিবন্ধন করবেন। যেখানে বলতে হবে এই এই খাতে আমার ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে, বিনিয়োগ আছে, আমার পরিবার এটার সঙ্গে যুক্ত। তাহলে আইন প্রণয়ন করার ক্ষেত্রে উনি যখন মতামত দেন, তখন বুঝতে পারবো উনি কতখানি নীতির ভিত্তিতে কথা বলছেন। কতখানি ব্যক্তি স্বার্থে বলছেন। এই স্বচ্ছতা যদি আমাদের সংসদের ভেতরে না আসে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে, তাহলে আগে যে স্বার্থগুলোর কথা বলেছি, যে বিকৃতির কথা বলেছি তা চলে আসবে।’ বলেন ড. দেবপ্রিয়।

সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহারে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে অর্থনীতির কাঠামোগত রুপান্তরের দিক সম্পর্কে সুস্পষ্ট প্রতিফলন থাকা উচিত। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হবো। উন্নয়ন রাষ্ট্র থেকে উদ্যোক্তা রাষ্ট্রে যেতে হবে। উদ্যোক্তা শ্রেণী সৃষ্টি করতে চাইলে সরকারের নীতিমালার সাহায্য লাগবে। নতুন উদ্যোক্তাদের লাইফ সাইকেল সাপোর্ট দিতে হবে। আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের বড় বাজার হবে। সেভাবে উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে হবে।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম

দেবপ্রিয় ব্যবসায়ীক উদ্যোগ সিপিডি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর