Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইশতেহারের জন্য এলডিপি’র ১২ দফা প্রস্তাবনা, রোববার ইসিতে বৈঠক


২২ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:১১

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে জিততে পারলে গত ১০ বছরে দোষী পুলিশদের কোনো ধরনের শাস্তি না দেওয়াসহ ১২ দফা প্রস্তাবনা রেখেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনি ইশতেহার তৈরিতে এই ১২ দফা প্রস্তাব বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে দলটি। প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছেও তুলে ধরা হবে জানিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর বনানীর হোটেল ফিউশান হান্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ নির্বাচনি ইশতেহারের জন্য এই ১২ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর এবারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে বাংলাদেশ। নির্বাচন হবে কি না, জনগণ ভোট দিতে পারবে কি না— এসব নিয়ে চরম সংশয় দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জাতি, ধর্ম, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নিজেদের মধ্যে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাতে হবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন জনগণের সৎ সাহস ও সচেতনতা। তাহলে সব ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। এতে সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে দলীয়করণ থেকে রেহায় পাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এলডিপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সব স্তরের সরকারি, আধাসরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দলীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে, নিজের বিবেকের তাড়নায় জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করবে। কোনো রাজনৈতিক দলের সেবাদাস হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মনুষ্যত্বের কাজ হবে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে, আগামী দিনে আমরা নির্বাচিত হলে জনগণের কল্যাণে ১২টি প্রস্তাবনা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব।

এলডিপির ১২ দফা প্রস্তাবনাগুলো হলো—

১. গত ১০ বছরে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দলীয় আনুগত্যের মাধ্যমে সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য দায়িত্ব পালন করেছে, তারা নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষভাবে কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না;

২. যেসব সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেন বা পালনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়, তাদের জন্য বেতনের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়া ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে;

৩. পুলিশ বাহিনীর জন্য বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে পৃথক হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করা হবে;

৪. পুলিশ প্রসাশনসহ সব গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে সবসময় নিরপেক্ষ রাখার বিধান রেখে আইন করা করা হবে;

৫. নিয়োগ ও পোস্টিং বাণিজ্য বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে;

৬. বিচার বিভাগ, শিক্ষা, প্রশাসন, দুদক ও নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করা হবে এবং এসব প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য নতুন আইন করা হবে;

৭. ডিজিটাল আইন সংশোধন করা হবে;

৮. যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নির্বাচনের দায়িত্ব পেতে পারেন, ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকলে নির্বাচন কমিশনের উচিত, অনতিবিলম্বে সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে অপসারণ করা;

৯. বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকার প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের তথ্য সংগ্রহের অজুহাত দেখিয়ে, থানার অফিসাররা তাদেরকে হয়রানি করছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত অনতিবিলম্বে তা বন্ধ করা;

১০. সরকার বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে, নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবান্বিত করার জন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত এবং তাদের এ দূরভিসন্ধি বাস্তবায়নের জন্য সাবেক অনেক সচিবকে বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শনের নামে, তাদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত-অনতিবিলম্বে তা বাতিল করে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটানো;

১১. তফসিল ঘোষণার পর গত কয়েকদিনে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে নিরব না থেকে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে হবে; এবং

১২. প্রতিহিংসা এবং প্রতিরোধের রাজনীতি থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে। সহনশীল হতে হবে ও রক্তপাত এড়াতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।

এসব প্রস্তাবনা ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের কাছে তুলে ধরবেন এবং আগামী রোববার (২৫ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরবেন বলে জানান কর্নেল (অব.) অলি।

সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসেডিয়াম সদস্য আব্দুল করিম আব্বাসী, আব্দুল গনি ও প্রফেসর আব্দুল্যাহ এবং যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর

এলডিপি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গণপরিবহনে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছেই
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০০

সম্পর্কিত খবর