সাবেক প্রতিমন্ত্রী মিলন চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার
২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:৩০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ ন ম এহসানুল হক মিলনকে চট্টগ্রাম নগরীতে একটি বাসায় আত্মগোপনরত অবস্থায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মিলন চাঁদপুরের একটি আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় মিলনকে গ্রেফতার করেছে।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জিয়াদ উল কবির সারাবাংলাকে বলেন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলন সাহেবকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে চাঁদপুরে নিয়ে আসা হচ্ছে। মিলনের বিরুদ্ধে ঢাকা ও চাঁদপুরে ১৬টি মামলা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- সিইসি’র দেখা পেলেন না সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী
বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মিলন পরীক্ষায় নকলের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যেমন আলোচিত হয়েছিলেন, তেমনি ক্ষমতার অপব্যবহারেরর অভিযোগে সমালোচিতও হয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাবাস করতে হয়েছে চাঁদপুরের কচুয়া থেকে নির্বাচিত এই সাবেক সংসদ সদস্যকে।
পুলিশ বলছে, গ্রেফতার এড়াতে সম্প্রতি মিলন চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানার চট্টেশ্বরী রোডে ‘মমতাজ ছায়ানীড়’ নামে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। ওই বাড়ির মালিক মো. শাহআলম মিলনের ঘনিষ্ঠজন।
পুলিশ মিলনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি শাহআলমকেও নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে চাঁদপুরের এসপি জানিয়েছেন, তারা শুধু একজনকেই গ্রেফতার করেছেন।
এর আগে, আদালতে হাজিরা দিতে নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। গত ১৮ নভেম্বর তার স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি নিয়ে হাজির হন ইসিতে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী কোর্টে হাজিরা দিতে পারছেন না। চাঁদপুর কোর্ট এলাকা পুলিশ, ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) ঘিরে রেখেছে। বোরকা পড়া কোনো মহিলা কোর্টে গেলে তার মুখোশ খুলে দেখা হচ্ছে। আমরা কোর্টে যেতে চাই। কিন্তু যেতে পারছি না।
ইসি’র কাছে লেখা চিঠিতে মিলন লিখেছেন, দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করার কারণে আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলোতে হাজিরা দিতে পারিনি। তবে সম্প্রতি দেশে ফিরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। আমি একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে নিশ্চিত হতে পেরেছি, পুলিশ আমাকে আদালতে হাজির হওয়ার সুযোগ না দিয়ে বাইরে থেকে গ্রেফতার, অতঃপর নতুন নতুন মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের লক্ষ্যে এমন ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যেহেতু নির্বাচনি আইন অনুযায়ী বর্তমান পুলিশসহ প্রশাসন ইসির নিয়ন্ত্রণাধীন, সে কারণে আমাকে ঘিরে পুলিশ প্রশাসনে এমন বেআইনি তৎপরতা বন্ধে আমি ইসির হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর