খাশোগি হত্যাকারী ১৫ ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ
২৩ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৭
।।আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
সৌদি সাংবাদিক ও লেখক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ১৮ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে সৌদি আরব। এছাড়া বরখাস্ত করেছে পাঁচ সরকারি কর্মকর্তাকে।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রয়াত কলামিস্ট খাশোগি গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়ে খুন হন। প্রথমদিকে এ বিষয় অস্বীকার করে সৌদি। জানায়, খাশোগি দূতাবাস থেকে জীবিত অবস্থায় বেরিয়ে গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
তুর্কি গোয়েন্দারা জানিয়েছে, খাশোগিকে হত্যা করতে ১৫ সদস্যের একটি সৌদি দল তুরস্কে প্রবেশ করেছিল। ওই দলের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মী, রয়াল কোর্টের কর্মী, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, ক্রাউন প্রিন্সের সহযোগীও ছিলেন।
তুর্কি গণমাধ্যম দ্য সাবাহ জানিয়েছে, আদেল আল জুবেইর নেতৃত্বাধীন সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই দলের সদস্যদের পাসপোর্ট ইস্যু করেছিল। তারা যে ব্যক্তিগত বিমানে চড়ে তুরস্কে প্রবেশ করে সেটি সৌদি সরকার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের।
ওই ১৫ সদস্যের মধ্যে নাম ও ছবি প্রকাশ করেছে সাবাহ। ছবিগুলো বিমানবন্দর, দু’টি হোটেল, সৌদি দূতাবাস ও ইস্তাম্বুলের সৌদি মহাদূতের ভবন থেকে নজরদারি ফুটেজ থেকে নেওয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি হচ্ছেন হচ্ছেন- সৌদ আল-কাহতানি (৪০)। ধারণা করা হয়, তিনি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রধান সহযোগী। তবে তিনি তুরস্কে প্রবেশকারী ওই দলের মধ্যে ছিলেন না।
১৫ সদস্যের দলে যারা ছিলেন-
সালাহ আল-তুবাইগি (৪৭) , ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ: তিনি সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপরাধ প্রমাণ বিভাগে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। সাবাহ অনুসারে, খাশোগির দেহ গলানোর কাজের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
মাহের মুতরেব, আল-কাহতানির সহযোগী: মুতরেব একজন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মী। তিনি আল-কাহতানির তথ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। দূতাবাসের ভেতর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিলেন তিনি। তাকে বিভিন্ন সময় ক্রাউন প্রিন্সের পাশে দেখা গেছে।
মেশাল সাদ আলবোস্তানি (৩১): তিনি সৌদি বিমান বাহিনীর একজন ল্যাফটেনান্ট।
মুস্তফা মোহাম্মদ আল-মাদিনি (৫৬): আল-মাদিনি একজন সরকারি চাকুরিজীবী। তিনি ইস্তাম্বুলে অভিযান পরিচালনাকারী দলের গোয়েন্দা কাজকর্মের নেতৃত্ব দেন। তিনি খাশোগির কাপড় পড়ে দূতাবাস থেকে বেরিয়ে যান। যাতে মনে হয়, খাশোগি নিজে দূতাবাস ছেড়ে গেছেন।
আব্দুলআজিজ মোহাম্মদ আল-হওসাওয়ি (৩১): ক্রাউন প্রিন্সের নিরাপত্তা দলের সদস্য
থার ঘালিব আল-হারবি: সৌদি গণমাধ্যম অনুসারে, এই নামের এক ব্যক্তিকে গত বছর সৌদি সেনাবাহিনীর ল্যাফটেনান্ট কর্নেল পদে উন্নীত করা হয়।
মোহাম্মদ সাদ আল-জাহরানি: সৌদি রয়াল গার্ডের সদস্য। তবে ঘটনার দিন তিনি তুরস্কে ছিলেন না বলে জানিয়েছেন।
খালিদ আয়েধ জি আল-ওতাইবি: সৌদি রয়াল গার্ডের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত।
আরও পড়ুন- সৌদি যুবরাজের দোষ দেখেনি সিআইএ: ট্রাম্প
ওয়ালিদ আব্দুল্লা আল-সেহরি: সৌদি বিমান বাহিনীর সদস্য।
নাইফ হাসান আল-আরিফ: সৌদি স্পেশাল ফোর্সের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত।
মানসুর ওথমান এম আবহুসাইন: একই নামের এক ব্যক্তিকে সৌদি গোয়েন্দাকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ওই ব্যক্তি তিনি কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ফাহাদ শাবিব আল-বালাওয়ি: সৌদি রয়াল গার্ডের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত।
সাইফ সৌদ আল-কাহতানি: ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত।
বদর লাফি এম আল-ওতাইবি: কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
তুর্কি মুসাররফ এম আল-সেহরি: কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/ আরএ