সবার আগে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দিতে হবে: মালয়েশিয়া
২৩ নভেম্বর ২০১৮ ১৯:৫২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধান ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাতো সাইফুদ্দিন আব্দুল্লাহ ।
এক বিবৃতিতে সাইফুদ্দিন আব্দুল্লাহ বলেন, নাগরিকত্বের নিশ্চয়তায় লুকিয়ে আছে এই জনগোষ্ঠীর মানবিক অধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা। নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হলেই স্বেচ্ছায়, নিরাপদে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের বসত-ভিটায় ফিরিয়ে নেয়া খুবই জরুরি। রোহিঙ্গারা যাতে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সেই পরিবেশ সৃষ্টিতে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে যথাযথ সহায়তা করবে মালয়েশিয়া। আঞ্চলিক জোট আসিয়ান এই সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
সাইফুদ্দিন আব্দুল্লাহ আরও বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটে মালয়েশিয়া খুবই উদ্বিগ্ন। গত ২০১৭ আগস্টের পর থেকে জীবন বাঁচাতে ৭ লাখ ২৭ হাজার রোহিঙ্গা যেমন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, ঠিক তেমনি মালয়েশিয়াতেও ৮০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টি করা মিয়ানমারের দায়িত্ব’
এদিকে, চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এখন রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার জন্য ইতিবাচক পরিস্থিতি এবং পরিবেশ সৃষ্টির পুরো দায়িত্ব মিয়ানমার সরকারের। ইউএনএইচসিআর মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে, এই সঙ্কট সমাধানে অনতিবিলম্বে ইতিবাচক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করুন। সঙ্কটের মূল এবং সমাধান সম্পর্কে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদনে বিস্তারিত উল্লেখ করা আছে। কোনো কাল বিলম্ব না করে মিয়ানমার সরকারের উচিত রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা।
গত ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীসহ একাধিক জাতি-গোষ্ঠীর লোকজন রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালালে জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার জন্য গত ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে। স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে গঠন করা হয় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমার সরকার কখনোই আন্তরিক ভূমিকা নেয়নি।
সর্বশেষ, চলমান নভেম্বরের ১৫ তারিখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম ব্যাচ রাখাইন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমার সরকার রাখাইনে এখনো ইতিবাচক এবং ফিরে যাওয়ার জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারায় রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি হয়নি।
সারাবাংলা/জেআইএল/এনএইচ