জাবিতে ৫ ‘ছিনতাইকারী’ শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক
২৫ নভেম্বর ২০১৮ ২৩:৫৮
।। জাবি করেসপন্ডেন্ট ।।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থী ও তার বান্ধবীর কাছ থেকে ছিনতাইয়ের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে হাতেনাটে আটক করে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছে ছাত্রলীগ। যদিও ‘ছিনতাইকারী’ পাঁচ শিক্ষার্থীও ছাত্রলীগকর্মী বলে পরিচিত। তারা ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর জাবি প্রক্টর বলছেন, তারা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
রোববার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. জাহিদুর রহমান অর্ণব শারীরিক নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন— জাবি বাংলা বিভাগের আসিফ আহমেদ ও সজিব কাজী এবং লোক প্রশাসন বিভাগের ইয়া রাফিউ শিকদার, মুস্তাফিজুর রহমান ও সোহেল রানা। তারা সবাই ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী বলে পরিচিত।
জাহিদুর রহমান অর্ণব অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, রোববার দুপুরে বান্ধবীকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরছিলেন তিনি। বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় গেলে অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী তাদের জোর করে বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে নিয়ে যায়। এ সময় তারা অর্ণব ও তার বান্ধবীর কাছ থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় এবং মারধর করে। তাদের কাছে ২৫ হাজার টাকা চাঁদাও দাবি করে ওই অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে হাঁটছিলেন। অভিযোগকারীদের ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় দেখে তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে তারা উত্তর দিতে পারেননি। পরে অভিযোগকারী ভয়ে দৌড় দেয়। এরপর অভিযোগকারীর পরিচিত ক্যাম্পাসের সিনিয়র ভাইয়েরা এসে তাদের মারধর করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক কে এম সানজীদ ফেরদৌস, উপবিজ্ঞান সম্পাদক আকিক হোসেন সিয়াম, উপঅর্থ সম্পাদক মাজেদুল হক বায়েজিদ ও ছাত্রলীগকর্মী সিহাব উদ্দিন ঘটনাস্থলে যান। তারা অভিযুক্তদের আটক করেন। পরে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানাসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে, এ ঘটনায় কে এম সানজিদ ফেরদৌস, আকিক হোসেন সিয়াম ও মাজেদুল হক বায়েজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর পৃথক অভিযোগপত্র দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন অভিযুক্তরা।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, আমরা ওদের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। তবে তারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করে কি না, তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আটক পাঁচ জন সরাসরি ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি। তবে তাদের কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছে, তারা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত।’
জাবি প্রক্টর আরও বলেন, তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা নোটিশের জবাবও দিয়েছে। তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। সোমবার ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের জরুরি সভায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/টিআই/টিআর