Monday 20 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘র‌্যাডিক্যাল ইয়ুথ গ্রুপ’ জেএমবির নতুন শাখা, আটক ৮


২৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:০৮ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:০১

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ‘র‌্যাডিক্যাল ইয়ুথ গ্রুপ’ নামে নতুন একটি ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছে জেএমবি। আধুনিক ও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত পেশাজীবীদের নিয়ে নতুনভাবে সংগঠিত হচ্ছে গ্রুপটি। এই গ্রুপের আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

সোমবার (২৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান,  প্রায় দুই বছর হলো কাজ শুরু করেছে এবং বর্তমানে এই গ্রুপটি দেশে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-২-এর যৌথ অভিযানে ২৫ নভেম্বর দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ভাটারা ও কলাবাগান এলাকা থেকে র‌্যাডিক্যাল ইয়ুথ গ্রুপের আট সদস্যকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতাররা হলেন, মো. আরাফাত আজম (৩০), রাশেদ আলম বাঁধন (২৮), মীর আফজাল আলী (৩৭), মাহাদী হাসান (২৩), রাদিউজ্জামান হাওলাদার অনিক (২৭), জালাল উদ্দিন শোভন (২৮), জারির তাইসির (২৬) ও আসিফুর রহমান (২৮)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৫-১৬ সালের শুরুর দিকে জেএমবি নতুন করে এই গ্রুপের কার্যক্রম শুরু করে। প্রাথমিক অবস্থায় গ্রুপের কার্যক্রম মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকলেও পরে তা কলাবাগান ও ভাটারা এলাকায় তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে। গ্রুপটিতে প্রায় ৩০-৩৫ জন সদস্য যুক্ত। গ্রুপের একজন দায়িত্বশীল আছে। পালাক্রমে অনুসারীদের ভেতর থেকে একেকজন আমীরের দায়িত্ব পালন করে। গ্রেফতার হওয়া শোভন, আফঝাল ও মাহাদী আমীরের দায়িত্ব পালন করেছে এবং বর্তমান আমীর মীর আফজাল আলী। আমীরের দায়িত্ব হলো গোপন বৈঠকগুলোর আয়োজন করা এবং বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তির নির্দেশনা অন্যান্যা সদস্যদের নিকট পৌঁছানো।

বিজ্ঞাপন

জেএমবি সদস্যদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এই গ্রুপটি মূলত ২০১৪ সালে জঙ্গি বাশারুজ্জামান চকলেটের তত্ত্বাবধানে গঠিত হয়েছিল। মোহাম্মদপুরের একটি মসজিদকে কেন্দ্র করে এই গ্রুপটি গঠিত হয়েছিল। সেখানে বাশারুজ্জামান চকলেট নিয়মিত যাতায়াত করত। ওই সময় চকলেটের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছিল গ্রেফতার হওয়া মাহাদী, শোভন ও বাঁধন। চকলেটের আত্মগোপনে চলে যাওয়া এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের ফলে কিছুদিন গ্রুপের কার্যক্রম স্তিমিত ছিল। এরপর তারা ২০১৬ সালের দিকে আবার কার্যক্রম শুরু করে। প্রতি সপ্তাহে একটি মিটিং করত তারা। এই গ্রুপের সদস্যরা অন্যান্য নতুন জঙ্গি সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করণ ও অর্থ সংগ্রহ করত। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অর্থ সংগ্রহ করে টেকনাফের রোহিঙ্গাদের অর্থ সরবরাহ করেছে বলে জানতে পেরেছে র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মাহাদী হাসান পেশায় একজন ছাত্র। সে ধানমন্ডির একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি পড়ছে। ২০১৪-১৫ সালে বাশারুজ্জামান চকলেটের সাথে মিশে জঙ্গিবাদে জড়ায়। এরপর চকলেট তাকে বিভিন্ন গোপন বৈঠকে নিয়ে যেতো। রাশেদ আলম বাধন ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইইই তে পড়া শেষ করেছে। তিনি ইনসাইড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের গণিতে শিক্ষকতা করছেন। জারির তাইসির মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছে। জারির এর আগে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া সিয়ামের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে। আসিফুর রহমান একজন ফ্রি ল্যান্সার ও ওয়েব ডিজাইনার। সে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ে। আরাফাত আজম একজন পেশায় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের জঙ্গি অভিযানে চকলেটের মৃত্যুর পর জেএমবির এই নতুন গ্রুপটি চালু করে দেশে আবারও জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে দেওয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। গ্রেফতারদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এদের পেছনে কারা রয়েছে তা জানা যাবে।

মূলত আধুনিক শিক্ষিত যুব সমাজকে জঙ্গিবাদে নিতে পারলে খুব সহজেই তাদের অনুসরণীয় পথ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে এ জন্য তারা র‌্যাডিক্যাল ইয়ুথ গ্রুপ নামে নতুন কার্যক্রম শুরু করে।

সারাবাংলা/ইউজে/এমআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর