Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘টেকনিক্যাল কারণে মহাজোটের তালিকা প্রকাশে সময় নিচ্ছি’


২৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:২১

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: টেকনিক্যাল কিছু কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনীত জোট ও মহাজোটের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশে সময় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এনে, যাচাই-বাছাই শেষে জোট ও মহাজোটের তালিকা প্রকাশ করব।’

সোমবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল রোববার (২৫ নভেম্বর) বলেছিলাম, আজকের (২৬ নভেম্বর, সোমবার) মধ্যে আমরা জোট ও মহাজোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করব। কিন্তু আমি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, আমরা কৌশলগত ও টেকনিক্যাল কিছু কারণে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এনে স্ক্রুটিনি (যাচাই-বাছাই) শেষে জোট ও মহাজোটগতভাবে তালিকা প্রকাশ করব।

জোটের শরিক দলগুলো নিজেদের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে জানিয়ে কাদের বলেন, আমাদের কৌশলগত কিছু বিষয় বিবেচনায় আছে। আমরা সব বিবেচনা ও যাচাই-বাছাই করব। কয়েকটি জায়গায় ডাবল প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন তারা মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। তারপর আমরা মাঠ পর্যায়ে সার্ভে করে দেখব, কে জনপ্রিয়। আবার কেউ কেউ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর ঋণখেলাপি হতে পারেন। তাই সবকিছু যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রকাশ করব, যেন শরিকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি না হয়।

তবে জোট শরিকদের জন্য ৭০ আসনের বেশি ছাড় দেওয়া হবে না বলে ফের জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, মহাজোটে ৭০ আসনের বেশি আসন ছাড় দেওয়া হবে না। জাতীয় পার্টি বড় শরিক বলে তারা একটু বড় ছাড় পাবে বলেও উল্লেখ করেন কাদের।

বিজ্ঞাপন

কাদের বলেন, আমরা দলীয়ভাবে কিছু প্রার্থীর তালিকা করে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছি। এটা কিন্তু প্রেসের জন্য করিনি। মিডিয়া এমন অনেক প্রার্থীরর নাম প্রকাশ করেছে, যাদের আমরা চিঠি দেইনি বা যাদের নাম তালিকায় নেই। এটি আমাদের জন্য একটি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এটি আপনাদের জন্যও লজ্জার কারণ। যে প্রার্থী মনোনয়ন পাননি, তার নামও টেলিভিশনের স্ক্রলে দেওয়া হয়েছে। আপনারাই বলেন, কারও নাম না থাকলেও যদি তা টিভি স্ক্রলে যায়, তাহলে কেমন দেখায়?— সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রাখেন কাদের।

নৌকার প্রার্থীদের মনোনয়নের চিঠি দেওয়ার পর কোনো কোনো এলাকায় সংঘর্ষ বা মারামারির ঘটনা ঘটেছে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল পরিবার। অনেকের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন থাকতে পারে এমপি হওয়ার। এটা খুব স্বাভাবিক, একটি পরিবারের মধ্যেও অনেক সময় ক্ষোভ-অভিমান থাকে। তবে এবার এটা খুব ব্যাপক আকারে হবে না বলেই আশা করছি।

শরিক ও মহাজোটের কারণে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন হবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমরা যাদের চিঠি দিয়েছি, তাদের বাইরে তো কাউকে মনোনয়ন দেবো না। তাদের কোনো প্রার্থী যদি বেশি যোগ্য হয়, তাহলে আমরা আমাদের প্রার্থীর সঙ্গে সেটা সেটেল করব। এবার ৪৫ জন নতুন মুখকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়াকে চমক বলেও অভিহিত করেন তিনি।

কক্সবাজারে আবদুর রহমান বদির বদলে তার স্ত্রী শাহীনা আক্তার চৌধুরী ও টাঙ্গাইলে আমানুর রহমান খান রানার বদলে তার বাবা আতাউর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বদির বউয়ের অপরাধটা কী? বদির কারণে তার বউ কি অপরাধী হবে? তার ছেলে-মেয়েদের দোষ কী? বিতর্ক (কনট্রোভারসারি) আছে, তাই আমরা বদিকে মনোনয়ন দেইনি। টাঙ্গাইলেও রানার বাবা আতাউর রহমান খানকে মনোনয়ন দিয়েছি। তিনি সারাজীবন আওয়ামী লীগ করেছেন। এখন তার ছেলে কারাগারে। তিনি খুনি কি না— এটা এখনও আদালতে প্রমাণ হয়নি। এই অবস্থায় আমরা তাকে মনোনয়ন দিতে পারি না। আমরা তাকে না দিয়ে বিতর্ক এড়িয়েছি। এত বিতর্কের পরও সাতটি জনমত জরিপে বদি ও রানা এগিয়ে আছে। তারপরও আমরা তাদের মনোনয়ন দেইনি।

বিজ্ঞাপন

শরিকদের সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে ৬৫ থেকে ৭০ আসন ছেড়ে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মনোনয়নের নামে বানরের পিঠা ভাগ করতে চাই না। জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, যুক্তফ্রন্ট— সব মিলিয়ে জয় পাওয়া যোগ্য প্রার্থীই দেওয়া হবে। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নির্বাচনে বিজয় অর্জন করবে— এমন প্রার্থীই মনোনয়ন পাবে।

প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার জন্য বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ঘোষণার দিকে তাকিয়ে আছেন কি না— এ প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, এমনটি আমরা ভাবছি না। আমি তো আমার প্রতিপক্ষের কৌশলের কাছে পিছিয়ে থাকতে চাই না। নির্বাচনি কৌশলকে কোনোভাবেই অগ্রাহ্য করা যায় না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে।

আপনারা গতকাল কত জনকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছেন— জানতে চাইলে তাদের বলেন, আমরা ২৩১ জনকে চিঠি দিয়েছি। কোনো কোনো আসনে দু’জনও আছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ও আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদসহ অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাদের গণফোরামে যোগ দেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এসব নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। বাংলাদেশে আমাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বৈ কমেনি। আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন। এবার আমরা জরিপের ওপর ভিত্তি করে মনোনয়ন দিয়েছি। বিদ্রোহ মানেই বহিষ্কার।

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য রেমন্ড আরেং, মারুফা আকতার পপিসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এনআর/জেএএম/টিআর

আ.লীগ কাদের নির্বাচন ২০১৮ মহাজোট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর