Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৩ ডিসেম্বর থেকে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী


২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:৪২

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে মাঠে নামবে সশস্ত্র বাহিনী। নির্বাচনের দুইদিন পর পর্যন্ত মাঠে থাকবে তারা।

অর্থাৎ নির্বাচন উপলক্ষে মোট ১০ দিন মাঠে থাকবেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা।

মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত এক সভায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ইসির একটি সূত্র বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে।

এ ব্যাপারে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, ভোটের আগে ও পরে ১০ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে মাঠে নামানোর বিষয়ে ইসির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তা চূড়ান্ত করা হবে সামনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের পর। সেই বৈঠকেই নির্বাচনে কত সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের প্রয়োজন হবে এবং কতদিনের জন্য মোতায়েন করা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এর আগে গত ২২ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা জানিয়েছিলেন, ১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর ছোট ছোট টিম মাঠে থাকবে। তিনি বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের পর সশস্ত্র বাহিনীর ছোট টিম পুলিশের সঙ্গে দেখা করবে। প্রতিটি জেলায় থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর এসব ছোট ছোট টিম। এসব টিমকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে পুলিশকে। তবে মঙ্গলবারের সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ১৫ ডিসেম্বরের পর সেনাবাহিনীর একাধিক টিম মাঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। এরপর ২৩ ডিসেম্বর থেকে তারা দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামবে।

ইসির সূত্রটি জানিয়েছে, ভোটে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা দিতে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্রবাহিনী কাজ করবেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের পর মাঠে নামবে সশস্ত্র বাহিনীর একটি ছোট টিম। এই টিম পুলিশ সদস্যদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি অবলোকন (রেকি) করবেন। তাদের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই আনুষ্ঠানিকভাবে কতজন সদস্য নির্বাচনের কাজে মোতায়েন করা হবে তা নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ১১ দিন, পুলিশ ও র‌্যাব সাত দিন, কোস্টগার্ড সাত দিন ও আনসার সদস্যরা ছয়দিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে ভোটের আগে ও পরে ১০ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্যরা মাঠে রাখার বিষয়ে কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র।

জানা গেছে, এবারও ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার এর আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবেন।

এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনেও তাদেরকে একইভাবে মোতায়েন করেছিল ইসি। যদিও ২০০৮ সালে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। ওই সময়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী অন্তর্ভূক্ত ছিল। পরে তা বাতিল করা হয়।

উল্লেখ্য, দশম সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৫ দিন মাঠে ছিল। তারা সাধারণ এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন এলাকায় কমিশনারের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন। ফৌজদারি বিধির আলোকে মোতায়েন করা সেনাবাহিনী ২০১৪ সালের নির্বাচনে মূলত স্ট্রাইকিং বা রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। ওই নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ৫০ হাজার সেনা সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি জেলা একটি ব্যাটালিয়ন (৭৪০ সদস্য) ও প্রতিটি উপজেলায় এক প্লাটুন (৩৫ জন) সেনা সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে মঙ্গলবার ইসিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত সভায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে ইসির কাছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বাজেট চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশই চেয়েছে ৪২৪ কোটি টাকা। এছাড়া আনসার ৪৪৩ কোটি টাকা, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৭০ কোটি, কোস্ট গার্ড ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দের পরিমাণ বাড়বে। তবে এই সভায় বৈঠকে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা হলে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য বলা হয়েছে। পরবর্তীতে আগামী ১৩ ডিসেম্বর এ নিয়ে বৈঠকে বসবে কমিশন। সেখানে বাজেট চূড়ান্ত করা হবে।

বিজ্ঞাপন

২০১৪ সালের নির্বাচনে সশস্ত্রবাহিনীর জন্য ৫৭ কোটি ২৬ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪০ টাকা। পুলিশের জন্য ৫৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৯ টাকা, বিজিবির জন্য ১৭ কোটি ১৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩৫ টাকা, আনসার বাহিনীর জন্য ৬৩ কোটি ২১ লাখ ৯৯ হাজার ৩০২ টাকা বরাদ্দ ছিল।

সারাবাংলা/জিএস/এসএমএন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর