Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পর্যবেক্ষক না পাঠানোর বিষয়ে অনড় ইইউ


২৮ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:০৫

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: যথেষ্ট সময় ও প্রস্তুতি না থাকায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে এই নির্বাচন নিয়ে তাদের আগ্রহের প্রতিফলন হিসেবে একটি নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দল থাকবে নির্বাচনের মাঠে।

বুধবার (২৮ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মিশনের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনিজ টেরিংকে এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

এসময় রেনিজ টেরিংকে বলেন, পর্যবেক্ষকের মতো বড় মিশন পাঠানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতির জন্য কমপক্ষে ছয় মাসের মতো সময় প্রয়োজন হয়। তাই ইইউয়ের সদস্য দেশগুলো এই নির্বাচনে (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে কেবল ছোট আকারে একটি এক্সপার্ট টিম থাকবে বাংলাদেশে।

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, এ নির্বাচনটি একটি বড় ‌চ্যালেঞ্জ। কারণ এই নির্বাচনে ৪০ হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্রে ১০ কোটিরও বেশি ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতগুলো কেন্দ্র ও ভোটারদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসাটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, ভালো ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়, সে বিষয়ে আমাদের শুভকামনা থাকবে।

ইসি’র সঙ্গে বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সফররত ইইউ নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান ডেভিড নয়েল ওয়ার্ড। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন সফররত ইইউ নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ইরিনি-মারিয়া গোওনারি, ইইউ দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগের প্রথম সচিব এরিকা হ্যাজোন্স ও ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত টেরিংকে।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রায় ১ ঘণ্টা বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ও বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত টেরিংকে।

এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক কারণেই বাংলাদেশে নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে একটি পূর্ণ দল পাঠাতে হলে কমপক্ষে ছয় মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। আমাদের অংশীদার দেশগুলো থেকেও নির্বাচনি পর্যবেক্ষক পাঠানোর চাপ রয়েছে। ফলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইইউ সদর দফতর কোনো দেশে নির্বাচনি পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। ফলে যতগুলো দেশ থেকে নির্বাচনি পর্যবেক্ষক পাঠানোর অনুরোধ এসেছে, তার সবগুলো রাখা ইইউয়ের পক্ষে সম্ভব নয়।

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, এসব কারণেই বাংলাদেশে নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে ইইউ একটি নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে ইই্উ বাংলাদেশের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হতে পারে বলে ইইউ ভাবছে— এমন প্রশ্নের জবাবে টেরিংকে বলেন, ১০ কোটি ৪০ লাখ ভোটার ও ৪০ হাজার নির্বাচনি কেন্দ্র আগামী নির্বাচন ইসির সামনে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। আমরা আশা করি, এটি একটি বেশ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে। সেই সঙ্গে এই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। আমরা নির্বাচন কমিশনের সাফল্য কামনা করেছি।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন কমিশনকে ইইউয়ের পক্ষ থেকে কোনো সুপারিশ করা হয়েছে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ও অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে বেশ ভালো বৈঠক হয়েছে। মূলত ইসির সঙ্গে ইইউ নির্বাচনি বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই ছিল এই বৈঠক। এই বিশেষজ্ঞ দলটি বাংলাদেশে ৪০ দিনের মতো থাকবেন। ওই সময় তারা নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। সেই সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে তাদের কিছু সুপারিশ দেওয়ার কথা রয়েছে। এখন কোনো সুপারিশ করা আজ কোনো সুপারিশ করিনি।

ইইউ নির্বাচনি বিশেষজ্ঞ দলের সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে ইইউয়ের আগ্রহ রয়েছে, সেটা প্রকাশর জন্যই মূলত নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দলের এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে। আমরা জানাতে চাই, পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না এলেও ইইউ বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিকে চোখ রাখছে।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

ইইউ ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর