ঐক্যফ্রন্টের পিএম কে, আবারও জানতে চাইলেন কাদের
২৮ নভেম্বর ২০১৮ ২০:১৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মানুষ স্বাভাবিক কারণে মনে করেছিল ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পিএম ফেইস। মানুষের সে ধারণার অবসান হলো। এখন কে ঐক্যফ্রন্টের পিএম ফেইস এটা আবারও জানতে ইচ্ছে করছে।’
বুধবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডীস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদসম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সাকিলা ফারজানাকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়াকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জঙ্গি বলেই মনোনয়ন পেয়েছেন, জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অনেকেই তাদের মনোনয়ন পেয়েছেন। এখনো তারা ঘোষণা করেননি, তবে এটাই স্বাভাবিক ব্যপার যে, এরা মনোনয়ন পাবে। তারা জঙ্গিবাদের পৃষ্টপোষক—এটা আমরা অনেক দিন আগে থেকে বলে আসছি। বিএনপি জঙ্গিবাদের পৃষ্টপোষক। এই পৃষ্টপোষকতার পরে তারা জঙ্গিকে মনোনয়ন দেবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’
ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানাকে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছেন বিএনপি।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, ‘আমি জানি না কি কারণ—কারণ তো আছে। সে কারণটা সত্য সত্যই। সেটা সময় মতো প্রকাশ হবে। আর কামাল হোসেনকে তো ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা বলা হচ্ছে। কিন্তু কে তাদের প্রধানমন্ত্রী হবেন? এই প্রশ্নটার উত্তর আজও জানা যায়নি। মানুষ স্বাভাবিক কারণে মনে করেছিল ড. কামাল হোসেন পিএম ফেইস। মানুষের সে ধারণা অবসান হলো। এখন কে ঐক্যফ্রন্টের পিএম ফেইস এটা আবারও জানতে ইচ্ছে করছে। একটা দল একটা জোট নির্বাচন করছে, সামনে কে কে লিড দিচ্ছে। কোন ফেইসটাকে কেন্দ্র করে দেশের মানুষ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন দেখছে, সে কথা আজও জানা গেল না।’
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে না পারলে দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘আমাদেরও তো আছে, আমরা আগে-ভাগে আঁচ করতে পেরে কক্সবাজারের বদির মতো অনেককেই মনোনয়ন দেইনি। হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানাই। আপিল বিভাগও এই স্বিদ্ধান্তে অটল, এই ব্যপারে আমরা স্বাগত জানাই।’
নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হতে পারে কি-না জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘হ্যাঁ, করতেই পারে। কারণ তারা তো নির্বাচনের এক মাস আগেও প্রধান নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তন চায়। এ ধরনের দাবি কি কোনভাবে যৌক্তিক? এ ধরনের দাবি উথ্যাপনের অর্থ হচ্ছে- নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে তাদের যে প্রার্থীতা মনোনয়ন দিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে একটা প্রশ্ন থেকে যায় তারা কি আসলে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে চায়, না-কি নির্বাচন বানচাল করতে চায়।’
কাদের আরও বলেন, সাত-দশ বছরের দণ্ড নিয়ে বেগম জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না, ‘এটা আদালত রায় দিয়েছে। আদালতের রায়কে তো নির্বাচন কমিশনকে মানতে হবে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য আওয়ামী লীগের পাঁচ শীর্ষ নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন পরিচালনার জন্য দক্ষ এবং অভিজ্ঞ যে নেতৃত্ব, তারা সাধারণত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতো। কিন্তু এবার আমাদের নেত্রী সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতের বিজেপিসহ অনেক রাজনৈতিক দলের মতো নেতাদের নির্বাচনের বাইরে রেখেছেন। আমরাও এবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে থাকবেন। এই ব্যাপারে গতকাল আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী তাদের ডেকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও কিছু পরামর্শ দেবেন। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সবাই নির্বাচন করে না। ভারতের অনেকেই কিন্তু দলকে সহযোগিতা করার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না।’
জোট ও মহাজোটের আসন বণ্টনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন মেরুকরণের সময় না, সমীকরণের সময়। সমীকরণ কোথায় গিয়ে ঠেকে সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও মারুফা আক্তার পপি।
সারাবাংলা/এনআর/এমআই