‘জামায়াত-বিএনপি একই বৃন্তে দু’টি ফুল’
২৯ নভেম্বর ২০১৮ ১২:৩০
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: জামায়াতে ইসলামীকে ছাড়া বিএনপি অচল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি বলেন, তারা একই বৃন্তে দু’টি ফুল।
বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতের প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে— সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা অভিনব কিছু নয়। জামায়াতকে ছাড়া বিএনপি অচল। তারা একসঙ্গেই কাজ করছে, রাজনীতি করেছে এবং সাম্প্রদায়িকতা করেছে।
২০১৪ সালে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা হয়েছে সেটিও বিএনপির সঙ্গে মিলে জামায়াত করেছে বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘জামায়াতকে আলাদা করে লাভ নেই। তারা এই বৃন্তে দুই ফুল।’
বিএনপি থেকে জঙ্গিদের মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই যে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, সে কী? সে জঙ্গ অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত নয়? বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গিয়েছে। তাহলে শাকিলা ফারজানা যদি জঙ্গি না হয়, তাহলে জঙ্গি কে? এরকম অনেক জঙ্গিকে তারা মনোনয়ন দিয়েছে বলে আমরা জানি। এগুলো তাদের জন্য নতুন কিছু নয়।’
বিএনপিসহ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে আসবে বলেও আশা করেন তিনি। বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন। বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট না থাকলে এটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না। আমরা একা নির্বাচন করতে চাই না। কিন্তু তারা যদি নির্বাচনে না এসে বলে যে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছে, তাহলে তাহলে তো হবে না। অবশ্য নির্বাচনে না এলে তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে— সেটা তারাও জানেন।
বিএনপি নেতাদের অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তাদের ইন্টার্নাল বিষয়। আমি যতদূর জানি, তাদের মধ্যে দু’জন কাঙ্ক্ষিত আসন থেকে থেকে মনোনয়ন পাননি বলে তারা মনোনয়ন জমা দেননি। আর মির্জা আব্বাস সময়মতো মনোনয়ন জমা দেননি। নির্বাচন কমিশন তাই মনোনয়ন জমা নেয়নি। বিএনপি মনগড়া অভিযোগ করলে তো হবে না।
তিনি বলেন, তাদের ভেতরে জগাখিচুড়ি অবস্থা বিরাজ করছে। সব নেতারা এখন মির্জা ফখরুলের কন্ট্রোলের বাইরে। এছাড়া ঐক্যফ্রন্টও এখন ঐক্যবদ্ধ নয়।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের হয়রানি করা হচ্ছে— এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তথ্যপ্রমাণ দিয়ে বলুন, কোথায় কোথায় আপনাদের প্রার্থীকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাহলে নির্বাচন কমিশন তার ব্যবস্থা নেবে। অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়া তাদের পুরানো অভ্যাস।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন বণ্টন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা জাতীয় পার্টিকে বলেছি, প্রয়োজনে ৩০০ আসনে আপনাদের প্রার্থী দেন। কিন্তু যোগ্য ও উইনেবল প্রার্থী হতে হবে। আমরা যাদের যোগ্য ও উইনেবল মনে করেছি— এমন প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দিয়েছি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট মনে করেছে, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ বিরাজ করছে। তাই তারা নির্বাচনের সময় পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। এটা তাদের ইন্টার্নাল বিষয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহম্মদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুব, উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এমএইচ/এসএমএন/টিআর