মলয় বোস হত্যা: ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চারসহ ১২ জন হাইকোর্টে খালাস
২৯ নভেম্বর ২০১৮ ২০:৪৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মলয় বোস (৪৫) হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামিসহ ১২জনকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নয়জনের মধ্যে পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন ও চারজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাস পাওয়া চারজন হলেন- সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও গোট্টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ইমামুল হোসেন ওরফে তারা মিয়া (৬৬), আটঘর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বকুল মাতুব্বর (৩৩), স্থানীয় বাসিন্দা হাশেম মোল্লা (৪৮) ও মোশাররফ হোসেন (২৩)।
মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন প্রাপ্তরা হলেন- মিজানুর মোল্লা (২৩), মামুন মাতুব্বর (২৪), মনিরুজ্জামান (পলাতক), মো. বেলায়েত হোসেন (২৩) ও উজ্জ্বল ব্যাপারী (২৯)।
অপরদিকে নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন প্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে ৪ জনের যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত। বাকি ৮ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। যাবজ্জীবন বহাল থাকা আসামিরা হলেন- সাত্তার মোল্লা (২৫), আককাস সিকদার (২০), নজরুল শেখ (২৮) ও ইমরান মাতুব্বর (২৫)।
খালাস পাওয়া ৮ জন হলেন- আজাদ মোল্লা (৩৮), সোহেল মিয়া (২৬), আমিনুল মাতুব্বর (৩৬), নসরু খান (২৯), হাতেম মোল্লা(৪৫), অলিয়ার রহমান (২৬), মিরাজ সর্দার (২৮) ও সেন্টু মাতুব্বর (২২)।
আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) বিচারপতি মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এস এম আব্দুল মবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম আজাদ খান ও মারুফা আক্তার শিউলী।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দুই আসামি বেলায়েত ও মনিরুজ্জামানের দেওয়া স্বীকারুক্তিমূলক জবানবন্দি ও চাক্ষুস সাক্ষীদের দেওয়া বক্তব্যের মধ্যে নামের গরমিল দেখা যায়। এ কারণে আসামিরা আদালতে বেনেফিট অব ডাউট (সন্দেহের সুবিধা) পাওয়ায় আদালত এ রায় দিয়েছেন।’ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানান।
২০১৩ সালের ২৪ মার্চ মলয় বোস (৪৫) হত্যা মামলায় নয়জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মোতাহার হোসেন। এরপর মামলাটি ডেথ রেফারেন্স ও আসামিরা আপিল দায়ের করলে হাইকোর্টে শুনানির জন্য আসে।
২০১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মলয় বসুকে জেলার আটঘর-কানাইপুরের সীমান্তবর্তী রণকাইল এলাকার ধীরেন্দ্রনাথ দাসের বাড়ির কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। দুই দিন পর ৯ ফেব্রুয়ারি মলয় বসুর স্ত্রী ববিতা বসু বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটি ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এ স্থানান্তর করা হয়।
সারাবাংলা/এজেডকে/এমও