Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেয়র আনিসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার


২৯ নভেম্বর ২০১৮ ২০:৫৯

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: আগামীকাল ৩০ নভেম্বর (শুক্রবার) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটিকে স্মরণ করে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া এবং খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এর মধ্যে থাকছে ৩০ নভেম্বর গুলশান আজাদ মসজিদে বাদ আসর বিশেষ দোয়া। এদিকে, তাঁর গড়া প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদি গ্রুপে বুধবার (২৮ নভেম্বর) আসর নামাজের পর মিলাদ এবং দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) যোহর নামাজের পরে তাঁর চেম্বারে কোরআন খানির আয়োজন করা হয়।

২০১৭ সালের ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে লন্ডন যান আনিসুল হক। সেখানে তিনি সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস (মস্তিষ্কের রক্তনালীর প্রদাহ) রোগে আক্রান্ত হন। অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৩ আগস্ট তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত বছরের ৩০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আনিসুল হক।

রাজনীতিতে কোনো দলে নাম না লেখানো আনিসুল হক ২০১৫ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। রাজধানীকে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও ‘স্মার্ট’ নগরী হিসাবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত হন তিনি।

তেজগাঁও ট্রাক টার্মিনালের সামনের সড়ক দখলমুক্ত করতে গিয়ে গত ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিক্ষুব্ধ চালকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। পরে ওই সড়ক দখলমুক্ত করে রাতারাতি তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান।

বিজ্ঞাপন

নগরবাসীর কাছে ঢাকার আকাশ একরকম অবরুদ্ধ হয়েই ছিল। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মধ্যেই তিনি ঢাকা শহর থেকে সকল বিলবোর্ড উচ্ছেদ করে আকাশকে খুলে দেন। যা এক সময় কেউ চিন্তাও করতে পারেনি।

শ্যামলী থেকে গাবতলী পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের যানবাহনে রাস্তার দখল ছিল। ফলে দীর্ঘ সময় যানজটে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হত। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক, ঘোষণা দিয়েই তিনি শ্যামলী থেকে গাবতলী পর্যন্ত রাস্তাকে গতিময় করে তোলেন।

বিভিন্ন এলাকার পার্কগুলো দখলদারদের কাছ চলে গিয়েছিল। আনিসুল হক একের পর এক সেসব পার্ক দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করেন। শহরের পথচারীদের জন্য আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করেন। এজন্য মানুষের আস্থার জায়গা তৈরি হয় আনিসুল হককে ঘিরে।

গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতন এলাকায় বিশেষ রঙের রিকশা এবং ‘ঢাকা চাকা’ নামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সেবা চালু করেন আনিসুল হক। বিমানবন্দর সড়কে যানজট কমাতে মহাখালী থেকে গাজীপুর পর্যন্ত সড়কে ইউলুপ করার উদ্যোগ নেন আনিসুল হক।

এছাড়া ঢাকার খালগুলো উদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন আনিসুল হক। তার নির্দেশে বনানীর ২৭ নম্বরে যুদ্ধাপরাধী মোনায়েম খানের বাড়ি ‘বাগ এ মোনয়েম’র অবৈধ দখলে থাকা অংশ উদ্ধার করে সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে।

আনিসুল হকের জন্ম নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১৯৫২ সালে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সম্মান) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। আশির দশকে টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান তিনি । বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘আনন্দমেলা’ ও ‘অন্তরালে’ নামে দুটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করতেন আনিসুল হক।

বিজ্ঞাপন

তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীও। ১৯৮৬ সালে তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘মোহাম্মদী গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন। মোহাম্মদী গ্রুপের তৈরি পোশাক ছাড়া বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, আবাসন, কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা রয়েছে। ডিজিযাদু ব্রডব্যান্ড লিমিটেড এবং নাগরিক টেলিভিশনের মালিকানাও তার ব্যবসায়ী গ্রুপের।

২০০৫ থেকে ২০০৬ সালে তিনি বিজিএমইএ’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিআইপিপির সভাপতি ছিলেন।

সারাবাংলা/জেআইএল/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর