‘করের টাকায় হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারও’
৩০ নভেম্বর ২০১৮ ১১:৪৮
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: ‘আমাদের করের টাকায় স্বপ্নের পদ্মাসেতু হচ্ছে। সেতুর কোনো একটি রড আমার টাকায়, তা নিয়ে আমার গর্ব হয়। সবাই মিলে কর দিলে নিজেদের অর্থেই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারও করা সম্ভব। নিজের দেশকে ভালোবেসে তাই সবাইকে কর দিতে হবে।’
শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে আয়কর দিবসের এক অনুষ্ঠানে করদাতা তারকাদের কন্ঠে এসব কথা উঠে আসে। আয়কর প্রদানে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর দিবসটি পালন করে থাকে এনবিআর। দিবসটির এবারের স্লোগান ‘আয়করের উদ্দেশ্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’।
আয়কর দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। তবে, নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার কোনো র্যালি অনুষ্ঠিত হয়নি। শুধু আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ ছিল এনবিআর। অন্যান্য বছরের মতো এবারও আয়কর দিবসের অনুষ্ঠানে দেশের মিডিয়া জগতের তারকারা অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, কর প্রদানে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষত তরুণদের। আর তরুণদের প্রথম ভোট যেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হয়।
গায়ক শুভ্র দেব বলেন, বাংলাদেশে এখন কর দেওয়ার পরিবেশ খুবই ভালো। নিজেদের টাকা দিয়ে আমরা পদ্মা সেতু করতে পারলে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারও করতে পারবো। আর তা করতে চাইলে সবাইকে কর দিতে হবে। চিত্রনায়কা চম্পাও তার বক্তব্যে সবাইকে কর দেয়ার আহবান জানান।
চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন কর দেয়া বাহাদুরি, কর দেয়ার মাধ্যমে আমিও তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। পদ্মাসেতুর কোনো একটি রড আমার টাকায় কেনা তা নিয়ে আমি মনেপ্রাণে গর্ববোধ করি। কর দেয়া অভ্যাসের ব্যাপার, তাই সবাইকে এই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
এনবিআরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন কর আদায়ের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার। কর আদায়ের পরিমাণ যদি দশ গুণ বাড়ানো সম্ভব হয় তাহলে আমরা উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাবো। নানা সংস্কারের মাধ্যমে করবান্ধব পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে এনবিআর কাজ করছে।
তিনি বলেন, রিটার্ন দাখিল গত দুই বছর ধরে ৪০ শতাংশ হারে বাড়ছে। সক্রিয় করদাতা এখন ১৫ লাখ, যখন তা ১ কোটি হয়ে যাবে তখন দেশের আরও বেশি উন্নয়ন হবে। কর অনুপাত ১২ শতাংশে নিয়ে যেতে পারলে অর্থনীতি মজবুত হবে। সেবা প্রদানকে জনবান্ধব করতে এনবিআরকে ভবিষ্যতে আরও ডিজিটাল করা হবে।
এনবিআর সদস্য (আন্তর্জাতিক করনীতি) কালিপদ হালদার বলেন, গত বছর করদাতা ছিল ৩২ লাখ, এ বছর তা হয়েছে ৩৮ লাখ। ৪ বছরে করদাতার সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। আর আয়কর আদায় গত দশ বছরে হয়েছে পাঁচগুণ। তিনি আরও বলেন, সামাজিক ভারসাম্য ও দায়িত্ব বজায় রাখার জন্য আয়কর দিতে হয়। করদাতাদের ভেতর আয়কর নিয়ে আগে নেতিবাচক প্রবাদ ছিল, কিন্তু আয়কর মেলা ও দিবস পালনের মাধ্যমে তা দূর হয়েছে।
এনবিআর সদস্য (আয়কর) জিয়া উদ্দিন মাহমুদসহ এনবিআরের কর্মকর্তারা আয়কর দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম