জলবায়ু পরিবর্তন: অস্ট্রেলিয়ায় স্কুলশিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
৩০ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:১৯
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সরকারের অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের প্রতিবাদে স্কুলত্যাগ করেছে পুরো অস্ট্রেলিয়াজুড়ে হাজারো বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩০ নভেম্বর), বিক্ষোভ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে তারা। খবর বিবিসির।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সরকারের বর্তমান নীতিমালা অপর্যাপ্ত। সোমবার (২৬ নভেম্বর) দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন স্কুল খোলা থাকাকালীন সময়ে তাদের এসব ‘কর্মসূচির’ সমালোচনা করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের জানান, সরকার জলবায়ু পরিবর্তন সামাল দিতে কাজ করছে।
বহু শিক্ষার্থী জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা তাদের প্রতিবাদ করার স্পৃহা আরও জোরদার করেছে।
এক বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী জাগভির সিং (১৭) বলেন, রাজনীতিবিদরা আজ যে সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তীতে তার ভুক্তোভুগি হব আমরা।
বিক্ষোভের আয়োজকরা বলেন, তারা সুইডেনের ১৫ বছর বয়সী গ্রেটা থানবার্গের করা বিক্ষোভ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তির আওতায়, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ২৬-২৮ শতাংশে কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি করেছে অস্ট্রেলিয়া।
সম্প্রতি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার, বিশুদ্ধ জ্বালানি কেনার জন্য তহবিল গঠন ও একটি হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা জানান, অস্ট্রেলিয়া জলবায়ু পরিবর্তন সামলাতে অগ্রগতি করছে।
তিনি সোমবার পার্লামেন্টকে বলেন, আমরা যেটা চাই সেটা হচ্ছে স্কুলগুলোতে বেশি শিক্ষাদান হবে ও কর্মসূচি কম হবে।
এই সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘ বলেছে, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য দেশগুলো কার্বন নির্গমন কমানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
জাতিসংঘের কার্বন নির্গমন ব্যবধান প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু বিষয়ক নীতিমালায় গত বছর থেকে কোন উন্নতি হয়নি।
শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার রাজধানীসহ ২০টি আঞ্চলিক শহরে ‘স্কুল স্ট্রাইক ৪ (ফর) ক্লাইমেট একশন’ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
যে কারণে এই বিক্ষোভ…
বিক্ষোভের চিন্তাটি প্রথমে আসে ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের মিলৌ আলব্রেক্ট ও হ্যারিয়েট ও’শিয়া ক্যারির মাথায়। এদের দু’জনেরই বয়স ১৪ বছর।
হ্যারিয়েট বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বহুদিন ধরে ভাবছি। আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। এছাড়া আরও অনেক কিছু করেছি। কিন্তু সেগুলোতে কোন কাজ হয়নি। আদতে, শিক্ষাই আমাদের একমাত্র শক্তি। এটা ত্যাগ করে আমরা বড় একটা পয়েন্ট প্রতিষ্ঠা করতে পারছি।
মিলৌ বলেন, আমরা চাই আমাদের সরকার জনসম্মুখে স্বীকার করুক যে জলবায়ু পরিবর্তন একটা সংকট। কয়লা খনন বন্ধ করু, নতুন কয়লা খনি তৈরি বন্ধ করুন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার শুরু করুন।
এটা আমাদের জন্য ভীতিকর
ভিক্টোরিয়ায় শুরু হওয়া বিক্ষোভটি সিডনির জিন হিঞ্চক্লিফের (১৪) নজরে আসার পর তিনি নিজের শহরে এমন একটি বিক্ষোভ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন।
তিনি বলেন, আমি ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত চুপচাপ বসে থাকবো।
জিন বলেন, আমাদের কাছে, সকল নবীনদের কাছে জলবায়ু পরিবর্তন একটি সত্যিকারের সমস্যা। আর আমরা এ বিষয়ে রাজনীতিবিদদের অকার্যকারিতা নিয়ে বিরক্ত।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও বিরূপ পরিবেশের প্রসঙ্গ টেনে জিন আরও বলেন, এটা আমাদের ভবিষ্যতকে কিভাবে প্রভাব ফেলবে তা ভাবা আমাদের জন্য সত্যিকারেই ভীতিকর।
সারাবাংলা/ আরএ