Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জনঘনত্ব অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ’


৩০ নভেম্বর ২০১৭ ১৪:০৯

বিশেষ প্রতিনিধি

সঠিক নীতিমালার আলোকে পরিকল্পনা ও নকশা প্রণয়ন করে অবকাঠামো নির্মাণ এবং তথ্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার হলে বাংলাদেশের নগরগুলিতে জনঘনত্ব অভিশাপ নয় আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করবে। এই জনঘনত্বের সুবিধা কাজে লাগিয়ে কার্বন নির্গমণ কম করা গেলে আধুনিক বাসযোগ্য নগর বিনির্মাণে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ইউএনডিপি বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামসহ একাধিক সংশ্লিষ্ট সংস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘স্মার্ট সিটি’ ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার ‘আধুনিক বাসযোগ্য নগর বিনির্মাণে পেশাজীবীদের ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, আমাদের নগরগুলিতে জনঘনত্ব অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ। এই জনঘনত্বেও সুবিধা কাজে লাগিয়ে কার্বন নির্গমণ করা গেলে আধুনিক বাসযোগ্য নগর বিনির্মাণে আমরা এক ধাপ এগিয়ে যাবো। এই কাজটি করার জন্য সঠিক নীতিমালার আলোকে পরিকল্পনা ও নকশা প্রণয়ন করে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে পেশাজীবীদের সমন্বিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর বলেন, প্লট ভিত্তিক উন্নয়ন থেকে বের হয়ে এসে প্রতিটি মানুষের জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য নীতিমালা দ্বারা বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন। ভর্তূকি দিয়ে রাস্তা-ঘাট ও বিভিন্ন সেবা প্রদান করে আবাসন শিল্পের প্রসারে বর্তমান ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এর অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের সেবা প্রাপ্তি, যানজট, জলজট দূর করার জন্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে আধুনিক বাসযোগ্য নগর গড়ে তোলা সম্ভব।

ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের চেয়াম্যান এবং অধ্যাপক স্থপতি আদনান মোর্শেদ বলেন, আধুনিক বাসযোগ্য নগর গড়ে তোলার জন্য আমরা এগিয়ে আছি। পাশ্চাত্যে নগরে জনঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের নগরগুলিতে জনঘনত্ব বেশী। কিন্তু স্বতঃস্ফূর্ত উন্নয়নের জন্য আমরা জনঘনত্বের সুবিধাটুকু কাজে লাগাতে পারছি না। ঢাকা শহরে শীর্ষে অবস্থানকারী শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল কয়েকটি নির্দ্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। যে কারণে মানুষকে অহেতুক এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। অথচ হাঁটা দূরত্বে অনেক সুবিধা নিশ্চিত করে যান্ত্রিক যানবাহনের উপর চাপ কমানো যায়। যা কার্বণ নিঃসরণ হ্রাস করতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগ এর অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থা ছাড়া আধুনিক বাসযোগ্য নগর গড়ে তোলা সম্ভব নয়। আমাদের নগরগুলিতে প্রচুর মানুষ হেঁটে চলাচল করে। তাদের জন্য প্রশস্ত ফুটপাত, গাছের ছায়া এবং বেঞ্চ এর ব্যবস্থা করা হলে আরো মানুষ কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সকালের হাঁটার কাজটা সেরে ফেলতে পারবেন। আর কেউ যদি আরো সক্রিয় থাকতে চান, তাদের জন্য বাইসাইকেলের আলাদা লেন তৈরি করা দরকার।

বিডি জবস্ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর বলেন, কল-কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে নগরীকে দূষিত করা হচ্ছে। নগরের উপরের চাপ কমানোর জন্য উদ্যোক্তাদের উপর আরবান সারচার্জ করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

বিডি সাইক্লিস্টের মডারেটর ফুয়াদ আহসান চৌধুরী বলেন, যারা বাইসাইকেলে যাতায়াত করেন তারাই স্মার্ট। আর স্মার্ট মানুষেরাই আধুনিক বাসযোগ্য নগর গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখতে পারে।

উন্মূক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. মাহবুবুল বারী, আইপিই গ্লোবাল এর কারিগরি পরিচালক ড. সৌমেন বাগচী প্রমুখ।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমএম/একে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর