রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ শয্যায় বীরপ্রতীক তারামন বিবি
১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:২০
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কুড়িগ্রাম: যে পতাকার জন্য একদিন অস্ত্র ধরেছিলেন সেই শরীরে পতাকা জড়িয়েই শেষ শয্যায় শায়িত হলেন বীর প্রতীক তারামন বিবি।
শনিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে তারামন বিবিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার দেয়া হয়। পরে ঐ মাঠেই দুপুর আড়াইটার দিকে জানাজা শেষে কাচারীপাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এসময় উপস্থিত থেকে বীর প্রতীক তারামন বিবিকে শেষ শ্রদ্ধা জানান কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম, রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী বীর বিক্রম, মুক্তিযোদ্ধা মেজর তাজ, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম টুকু, গণজাগরন মঞ্চের উদ্যোক্তা ইমরান এইচ সরকার, সাবেক এমপি জাকির হোসেনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ নভেম্বর কুড়িগ্রামের রাজীবপুর থেকে তাকে ময়মনসিংহের সম্মিলিক সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে এক সপ্তাহ আগে তিনি রাজিবপুরের নিজ বাড়ীতে ফিরে যান।
শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে তারামন বিবির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন বাড়ীতে গিয়েই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন। পরে রাত দেড়টার দিকে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয় এবং তিনি মারা যান।
৬১ বছর বয়সী তারামন বিবির পরিবারে রয়েছেন স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়ে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেছেন তারামন বিবি। মুক্তিবাহিনীদের সদস্যদের জন্য রান্না করা, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকবাহিনীর খবরাখবর সংগ্রহ করা এবং সম্মুখযুদ্ধে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন তিনি। বীরত্বপূর্ণ এসব অবদানের কারণে তাকে বীরপ্রতীক খেতাব দেয় বাংলাদেশ সরকার।
জানাজায় মায়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তারামন বিবির ছেলে আবু তাহের।
সারাবাংলা/এসএমএন