দেশে নির্বাচনের ন্যূনতম সুষ্ঠু পরিবেশ নেই: বিএনপি
১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:৩৯
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘দেশে নির্বাচনের ন্যূনতম সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। সারাদেশে বিএনপির ৭ সম্ভাব্য প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জামিন হচ্ছে না। বিচারিক আদালত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। সরকারের সাজানো পুলিশ প্রশাসন, সিভিল প্রশাসন দলীয় ভূমিকায় অবর্তীন হয়েছে।’
শনিবার (১ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন। বিকাল সাড়ে ৩ টায় নির্বাচন ভবনের কনফারেন্স রুমে বৈঠকটি শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা তারা বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে ৬ দফার একটি লিখিত দাবিও উপস্থাপন করা হয়।
পরে মওদুদ বলেন, ‘সারাদেশে এমপি-মন্ত্রীরা পদত্যাগ না করে প্রার্থী হওয়ায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রয়েছে, এমন বলার ন্যূনতম সুযোগ নেই। প্রতিদিন রাতের বেলায় অভিযানের নামে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আটক করছে। পুলিশি হয়রানির কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। ৯১, ৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে নির্বাচনকালীন প্রশাসনের রদবদল করা হলেও এবার তা না করায় সরকারের অনুগত প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কোনোভাবেই সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিসি-এসপি ইউএনও ও ওসিদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু তারা সরকারের আনুগত বলেই তাদের এসব পদে সরকার নিয়োগ দিয়েছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদের স্বাভাবিক কারণেই বদলি করা হলে এতে করে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। তাদের মনে হবে এবার বুঝি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এই পরিবেশ যদি সৃষ্টি না হয়, তাহলে নির্বাচন একটি দুরূহ ব্যাপারে পরিণত হবে।’
সারা দেশে যেভাবে পুলিশি অভিযানের নামে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি করা হচ্ছে এ অবস্থা বন্ধ না হলে নির্বাচনের ন্যূনতম সুষ্ঠ পরিবেশ থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এজন্য প্রয়োজন ডিসি, এসপি, ইউএনও ওসিদের বদলি করা হলে কিছুটা হলেও পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এটা করা না হলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হবে। আমরা চাই না নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হোক।’
ইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দল
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন জাতির জন্য শেষ পরীক্ষা। একেবারেই শেষ পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় যদি আমরা উত্তীর্ণ না হই, তাহলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারব বলে মনে হয় না। আমরা আশা করি নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করবেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে দাবি মেনে নিবেন। সরকার যেভাবে চাচ্ছে প্রশাসন সেইভাবে নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে। নির্বাচন কমিশন তা রোধ করছে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘বিচারিক আদালত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। সরকারের সাজানো পুলিশ প্রশাসন, সিভিল প্রশাসন দলীয় ভূমিকায় অবর্তীণ হয়েছে। উচ্চ আদালত বিভিন্ন সময়ে জামিন দিলেও বিচারিক আদালত নানা অজুহাতে তা আটকে রাখছে। এসব বিষযে প্রতিকার চেয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কমিশন বক্তব্য আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। তারা এ ব্যাপারে ইসি প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ছাড়াও, নির্বাচন কমিশন কবিতা খানম, রফিকুল ইসলাম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুশফিকুর রহমান, বিজন কান্তি সরকার প্রমুখ।
সারাবাংলা/জিএস/এমও