জাবিতে ‘বিতর্কিত’ সেই শিক্ষক পেলেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্ব
১ ডিসেম্বর ২০১৮ ২২:৫১
।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।
জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘বিতর্কিত’ সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসাকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্ব দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন ব্যক্তিগত কাজে ছুটিতে থাকায় সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা ওই শিক্ষককে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এর আগে গত ৫ নভেম্বর তাকে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এর আগে ২০১১ সালে সহকারী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানের বিরুদ্ধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ‘অভিযোগ’ ওঠে। এ ঘটনায় তাকে আটকও করেছিল র্যাব। পরে ২০১২ সালে ছাত্র-আন্দোলনের মুখে সহকারী প্রক্টর থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ফিরোজ। ওই বছর শাখা ছাত্রলীগের কোন্দলে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহম্মেদ নিহত হলে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
এদিকে মেডিকেলের ‘প্রশ্নফাঁস’ এবং সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালনে অবহেলার মত গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও কেন তাকে আবারও ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
একজন সহকারী প্রক্টর অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমান প্রক্টরিয়াল বডির সব শেষ নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক ফিরোজ। কাজের দিক থেকে তার চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ সহকারী প্রক্টর বর্তমানে এই বডিতে আছে।’
অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন এ বছরের শেষের দিকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। আ স ম ফিরোজ-উল-হাসাকে তার স্থলাভিষিক্ত করার জন্য প্রশাসনের একটি অংশ উঠেপড়ে লেগেছে। এ জন্য তড়িঘড়ি করে আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়ারও পায়তাঁরা চলছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন বিতর্কিত একজন শিক্ষককে প্রক্টরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হলে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।
অভিযোগের বিষয়ে আ স ম ফিরোজ উল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রশ্নফাসেঁর সাথে আমার কোনো সংশ্লিষ্ঠতা নেই। এ ছাড়া আমি র্যাবের তদন্তে এবং সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। আমার কাছে সব প্রমাণ আছে। বারবার এসব অভিযোগ এনে আমাকে রাজনৈতিকভাবে অপদস্ত করা হচ্ছে।’
এ ছাড়া ২০১২ সালে পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের পর পুরো প্রক্টোরিয়াল টিম পদত্যাগ করেছিলো। কিন্তু বরাবরই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার পদত্যাগকে হাইলাইট্স করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি একটি মীমাংসিত বিষয়। এই ঘটনায় সে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে।’ পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির নিজেকে বাঁচাতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।’
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সারাবাংলা/এমআই