খাশোগি হত্যার আগে ও পরে সৌদি যুবরাজের ১১টি বার্তা!
২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:৪০
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
তুরস্কে সৌদি দূতাবাসের অভ্যন্তরে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে ও পরে সৌদি যুবরাজ সালমান তার উপদেষ্টা সৌদ আল-কাহতানিকে মোট ১১টি মেসেজ বা বার্তা পাঠিয়েছেন। গত ২ অক্টোবর সালমান ও কাহতানির মধ্যে এই বার্তার আদান প্রদান হয় বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) অপ্রকাশিত সূত্রে জানায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। খবর আল-জাজিরার।
সৌদ আল-কাহতানি সৌদি যুবরাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় তাকে বরখাস্ত করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রও কাহতানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, অত্যন্ত গোপনীয় ওই ফাইলে নিশ্চিতভাবে বলা হয়নি যুবরাজই খাশোগি হত্যায় নির্দেশ দিয়েছেন। তবে খাশোগিকে হত্যায় ১৫ সদস্যের দলটির দায়িত্বে ছিলেন কাহতানি। তাই নিশ্চিতভাবে দাবি করা যায়, যুবরাজ সালমানের অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের অভিযান অসম্ভব।
সিআইএর নথিতে আরও বলা হয়, সালমান ২০১৭ সালের আগস্টে তার এক নির্দেশনায় বলেছেন, খাশোগিকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলে তাকে অন্য কোন দেশে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যেতে হবে ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
‘পরিকল্পনা বাস্তবায়ন’ বলতে হত্যা মিশনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছে সিআইএ।
তবে ফাঁস হওয়া ওই নথির ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি তদন্ত সংস্থাটি। গতমাসে তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, খাশোগি হত্যার সাথে সৌদি রাজতন্ত্রের শীর্ষ মহলের লোকেরা জড়িত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেসময় বলেছেন, খাশোগি হত্যায় যুবরাজ সালমান জড়িত থাকতে পারেন অথবা নাও পারেন!
উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে ব্যক্তিগত কাজের জন্য প্রবেশের পর নিখোঁজ হন দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগি। সৌদি আরব প্রথমে এ বিষয়ে অবগত নয় বলে জানালেও পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে স্বীকার করে নেয়, দুর্ঘটনাবশত খাশোগি নিহত হয়েছেন। তুর্কি কর্মকর্তারা জানান, সৌদি আরবের ১৫ সদস্যের একটি দল পরিকল্পিতভাবে খাশোগিকে হত্যা করে। এরপর খুব সম্ভবত এসিড দিয়ে গলিয়ে দেওয়া হয় খাশোগির মৃতদেহের সকল চিহ্ন।
সৌদি আরবের ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর শালান বিন রাজিহ শালান বলেছেন, খাশোগি হত্যায় ১১ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দাবি করা হয়।
জামাল খাশোগি সৌদি রাজতন্ত্র ও যুবরাজ সালমানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি সৌদি যুবরাজের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন ও যুবরাজের নির্দেশেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়। খাশোগি যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ছিলেন।
সারাবাংলা/এনএইচ