‘জনগণ বিএনপি নেতাদের এবার পালানোর সুযোগ দেবে না’
২ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:৩৬
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রিজভী আহমেদসহ বিএনপি নেতাদের জনগণ এবার আর পালানোর সুযোগ দেবে না, বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অনুরোধ জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য- আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না। ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি আমরা সবসময় জনগণের সঙ্গে আছি, অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।
ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সূত্র ধরে রিজভী আহমেদ বলেছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের নাকি পালাতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের পালানোর কোনো ইতিহাস নেই। পালানোর ইতিহাস ও উদাহরণ তো আছে বিএনপির। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মুচলেকা দিয়েছেন তিনি আর রাজনীতি করবে না। মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করবে না বলে সে দেশ থেকে পালিয়ে ছিল। এখন পর্যন্ত মামলার আসামি হওয়ার পরেও মামলা মোকাবেলা করেনি। তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই পলাতক। আরও বহু নেতা ২০০৮ সাল থেকে পলাতক। এবার ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর রিজভী আহমেদসহ বিএনপি নেতাদের জনগণ আর পালাতে দেবে না।
এ ছাড়া তিনি বলেন, রিজভী আহমেদকে অনুরোধ করবো আপনারা আর পালানোর চেষ্টা করবেন না।
রিজভী আহমেদের অভিযোগ বিএনপি নেতাদের মনোনয়নপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে বাতিল করা হচ্ছে- এ প্রেক্ষিতে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তারা বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, ঋণখেলাপি। প্রত্যেকটি মনোনয়নপত্র রিটার্নিং অফিসার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যেগুলো বৈধ সেগুলোকে বৈধ ঘোষণা করেছে। আর যেগুলো বাতিল যোগ্য সেগুলোকে বাতিল করা হয়েছে। বাতিল কি কারণে করা হচ্ছে সেটি সুনির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি চায় তাদের দণ্ডিত আসামিদের মনোনয়ন বৈধ হোক। বিভিন্ন কারণে অন্যান্য দলেরও মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। এটি শুধু বিএনপির বেলায় হয়েছে যে তা নয়। সব দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন দিয়ে তাদের স্লোগান হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে।’
বিএনপির রাজনীতিটাই হচ্ছে মিথ্যাচার উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের রাজনীতি অপপ্রচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তারা প্রতিনিয়ত সংবাদ সম্মেলন করে অপপ্রচার করে এবং তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে আসছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা অপপ্রচার আরও বাড়িয়েছে। তারা এসব অপপ্রচার বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডি, ভুয়া নিউজ পোর্টাল, বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের হুবুহু নিউজ পোর্টাল খুলে তারা সেই অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পীদের নামে তারা নিউজ পোর্টাল খুলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চরম অপচেষ্টা তারা চালিয়ে আসছে। এসব অপপ্রচার চালানোর ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইউআরএল (ওয়েব ঠিকানা) ব্যবহার করে। একটি বন্ধ করলে আরেকটি দিয়ে শুরু করে। লন্ডনে এবং মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসব কর্মকাণ্ড বেশি করে চালানো হচ্ছে।’
বিএনপির অপপ্রচার করার প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তার প্রমাণ আপনারা দেখেছেন, কয়েকদিন আগে কামাল হোসেন, আলামিন এবং এনামুল নামে তিনজনকে ধরা হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই ছাত্র শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও তারা যুক্ত। ধরা খাওয়ার পর তারা স্বীকার করেছে। রিজভী আহমেদকে অনুরোধ জানাবো, নিজেরা যে অপকর্মগুলো করছেন সেগুলো বন্ধ করুন। অন্যদের ওপর নিজেদের অপকর্ম চাপানোর চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অপপ্রচার করে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেভাবে বদলে গেছে আমরা সেটাই প্রচার করি। সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মকে ব্যবহার করেও অতীতের মতো অপপ্রচার চালানো শুরু করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এনআর/এমআই