ঢাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন মঙ্গলবার
৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:০৮
।। ঢাবি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকর পরিষদের নির্বাচন আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।
আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দলের সভাপতি পদে এবারের প্রার্থী শিক্ষক সমিতির দুই বারের সভাপতি ও তিনবারের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম।
অন্যদিকে, বিএনপিপন্থী সাদা দল থেকে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন সংগঠনটির সাবেক আহ্বায়ক ও মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন খান এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. লুৎফর রহমান।
আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দল তাদের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে শিক্ষকদের জন্য গবেষণা ও বই ভাতা বৃদ্ধি, তরুণ শিক্ষকদের জন্য বিদেশে উচ্চ শিক্ষক গ্রহণের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ওভারসিস স্কলারশিপ’ চালু, ৫ শতাংশ সরল সুদে শিক্ষকদের জন্য গৃহঋণের নীতিগত সিদ্ধান্ত পাওয়া, শিক্ষকদের জন্য অফিসিয়াল পাসপোর্টের ব্যবস্থা করা, পরীক্ষা সংক্রান্ত সব ভাতা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা, শিক্ষক সমিতির সহযোগিতায় ৬২০ কোটি টাকার নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অ্যাকাডেমিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করা।
এছাড়া নীল দল নির্বাচনে ১৩ দফা ইশতেহার দিয়েছে। সেগুলো হলো- সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নতুন গবেষণা প্রকল্প চালুর ব্যবস্থা করা, বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপের আওতায় স্বল্প মেয়াদে সিনিয়র সহকর্মীদের জন্য পোস্ট ডক্টরেট গবেষণা বৃত্তি চালু করা, ক্যম্পাসের নিরাপত্তা ও সবুজায়ন করার করার ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন রুটে শিক্ষকদের জন্য বাসের সংখ্যা বাড়ানো এবং ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শাটল বাসের ব্যবস্থা করা, শিক্ষকদের আবাসনসমূহের সংস্কার ও শিক্ষকদের বাসা ভাড়া বাস্তবসম্মত করা, উচ্চ শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী স্কলারশিপে শিক্ষকদের জন্য বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানো, বৃহত্তর বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত লাউঞ্জসমূহ আধুনিকায়ন করা এবং অটোমোশনের আওতায় ক্যম্পাসের প্রতিটি ভবনকে সুবিন্যস্ত নেটওয়ার্কের আওতায় আনা।
নীল দলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষকদের সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি। তরুণ শিক্ষকদের বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বহুমাত্রিক উদ্যোগের ফলে শিক্ষকদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি নীল দলের প্রতি শিক্ষকদের এক ধরনের পজিটিভ ধারণা রয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ। সবকিছুকে মিলিয়ে আমাদের শিক্ষকরা অতীত অর্জনকে বিবেচনায় নিয়ে নীল দলকে পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী করবে বলে প্রত্যাশা করি।’
এদিকে, বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল ‘সাদা দল’ কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে লাঞ্ছিত শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ানো, রাজউকে বিশেষ ব্যবস্থায় প্লট বরাদ্দ ইত্যাদির কথা উল্লেখ করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে।
তারা ইশতেহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও সুনাম রক্ষা করা, শিক্ষকদের অ্যাকাডেমিক ও পেশাগত উৎকর্ষ বিধান ও স্বার্থ সংরক্ষণে আরো শক্তিশালী কার্যকর ভূমিকা রাখা, দল-মত নির্বিশেষে সকল যোগ্য শিক্ষকদের সময়মত পদোন্নতি, স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তন, শিক্ষকদের আবাসিক সমস্যার সমাধান, বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত বৈষম্যের অবসান, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি প্লট বরাদ্দ, চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধি ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া তারা সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি চর্চা ও নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি জন্য ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার বিষয়ে জানিয়েছে।
সাদা দলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন খান বলেন, ‘আমরা আমাদের শিক্ষকদের পেশাগত সুযোগ সুবিধা আদায়ের জন্য কাজ করব। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের উন্নত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করার জন্য কাজ করবো।’
সারাবাংলা/কেকে/এমও