‘প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে নিজেদের কলঙ্কিত করতে চাই না’
৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:৫০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান আইন প্রয়োগ করতে না পারলে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মনে করেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘সবার জন্য সমভাবে আইনের প্রয়োগ করা না হলে তা আইন নয়, আইনের অপলাপ মাত্র। আইন সিদ্ধ না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে আমরা নিজেদের কলঙ্কিত করতে চাই না। আমি জানি আপনাদের কেউই এর ভাগিদার হতে চাইবেন না।’
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। আজ ১৩টি জেলার ৪০৮ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ২৬ দিন বাকি। নির্বাচনের মূল দায়িত্বপালন করেন প্রিজাইডিং অফিসার। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন করে প্রিজাইডিং অফিসার থাকেন। সার্বিক বিবেচনায় তিনিই সঞ্চালক। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো নতুন সঞ্চালক তৈরির করিগর আপনারা। আপনারা দ্বৈত দায়িত্ব পালন করছেন বললেও অত্তুক্তি হবে না।
প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের তিনি আরও বলেন, আপনারা নির্ভয়ে, সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করবেন। আপনারা ব্যর্থ হলে নির্বাচন ব্যর্থ হবে। অন্যদিকে আপনাদের সাফল্যে উদ্ভাসিত হবে সমগ্র জাতি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচনের কোনো ধারাবাহিকতা নেই। কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, কখনো সেনা সমর্থিত সরকারের অধীনে, কখনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের নির্বাচনের কোনো ধারাবাহিকতার রীতি গড়ে না উঠলেও এই প্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা ধারাবাহিকতার ঐতিহ্য সৃষ্টি করতে যাচ্ছি। এ জন্যই এই নির্বাচনকে আমরা ভিন্নভাবে প্রবাহিত হতে দিতে পারি না।
তিনি বলেন, আপনারা দায়িত্ববোধ ও নির্বাচন সম্পর্কে জনমনে আস্থার ক্ষেত্র তৈরি করবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থী আপনাদের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিন্তে থাকবেন। আপনাদের কাছে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অতিসামান্য। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যাতে ইচ্ছামত পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, এই সামান্য চাওয়াই এখন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বাস্তবতায় বিশাল কর্মযজ্ঞে রুপান্তরিত হয়েছে।
মাহবুব তালুকদার বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা শুধু দেশবাসী নয়, বিশ্ববাসীর নজরদারীর সামনে। আমাদের প্রতিটি কার্যকলাপ, প্রতিটি পদক্ষেপ সকলেই প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। সেদিক থেকে এই নির্বাচন আমাদের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখার নির্বাচন। একটি মর্যাদাবান জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে চাই। আমরা কিছুতেই আমাদের সম্ভ্রম নষ্ট হতে দিতে পারি না।
তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদের আত্মদানের মাধ্যমে এই দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। স্বাধীনতার আকাঙ্খা ছিল একটি গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রের মূলকথা আইনের শাসন এবং সবার প্রতি সমভাবে আইনের প্রয়োগ। স্বাধীনতার মাধ্যমে সেদিন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও সুখী বাংলাদেশের স্বপ্ন রচিত হয়েছিল। শুদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই স্বপ্নটিকে বাস্তবতায় রুপ দিয়ে আসুন আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করি।
সারাবাংলা/ জিএস/জেএএম