বাড়ি ফিরেছে সুস্থ তোফা-তহুরা
৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:৪৫
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
গাইবান্ধা: জন্ম থেকে জোড়া লাগা জমজ শিশু তোফা ও তহুরা এখন সুস্থ। বেড়ে ওঠার লক্ষণ হিসেবে হাঁটতেও শিখছে তারা। দুজনের মধ্যে তোফা তো রীতিমতো বাড়িময় ছোট ছোট পায়ে হেঁটে বেড়ায়। আর ওকে দেখে হাঁটার চেষ্টা করে তহুরাও।
আর তাদের হাঁটার দৃশ্য দেখে আনন্দে চোখে পানি আসে স্বজনদের। কারণ, কিছুদিন আগেও জীবনে কখনও এই দৃশ্য দেখবেন তা ভাবেননি তারা।
সারাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত এই দুই শিশু। কারণ তোফা ও তহুরা জোড়া লাগা অবস্থায় ১০ মাস একসঙ্গে বড় হয়েছে। তাদের পিঠের কাছ থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দু’জনের পায়ুপথও ছিল অভিন্ন। তবে মাথা, হাত, পা আলাদা ছিল। এর আগে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তিন জোড়া শিশুকে পরস্পর থেকে আলাদা করা হলেও তাদের ধরন আলাদা ছিল। তোফা-তহুরার কোমর ছিল জোড়া লাগানো, যাকে চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় বলা হয় ‘পাইগোপ্যাগাস’।
২০১৭ সালের ১ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরি বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২২ জন চিকিৎসক দীর্ঘ অস্ত্রোপচার শেষে আলাদা করেন তোফা ও তহুরাকে। সব মিলিয়ে মোট চারটি অস্ত্রোপচারের পর এখন আর ১০টা সাধারণ শিশুর মতোই সুস্থ তোফা-তহুরা।
চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে মা ও নানার সঙ্গে নিজ গ্রাম সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামের নানার বাড়িতে ফিরেছে তোফা-তহুরা। বাড়ি ফিরেই উঠোনে খেলতে শুরু করে তারা। প্রতিবেশীসহ গ্রামের মানুষ এসেছেন তাদের দেখতে। অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলাধূলা করেছে তোফা-তহুরা।
জমজ এই শিশুদুটির মা শাহিদা বেগম জানালেন, তোফা ও তহুরা সুস্থ আছে। তারা এখন চলতে পারে, হাঁটতে পারে। সবার দোয়ায় তারা ভালো আছে। তবে তহুরার সমস্যা কিছুটা বেশি থাকায় ওর হাঁটা শিখতে সময় লাগছে। তবে তোফাকে দেখে সেও হাঁটার চেষ্টা করে বলে জানালেন শাহিদা। এসবের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
নানা শহিদুল ইসলাম তার নাতনিদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
সারাবাংলা/এসএমএন