Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই’


৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১০:৪১

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জেনেও স্বাধীনতার পর থেকে ক্ষমতায় আসা কোনো সরকারই দৃশ্যমান কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পরিবেশকর্মীরা।

তারা বলেন, এর বিপরীতে বরং প্রতিটি সরকারের আমলেই বন উজাড়, নদী-নালা-জলাভূমি দখল, নদী ভরাট করা ইত্যাদি চলমান থেকেছে। এমনকি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ‘নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ প্রণয়ন করে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিলেও এই সরকারই আবার রামপালের কয়লাভিত্তিক তাপ বিদুৎকেন্দ্র স্থাপনের মতো সুন্দরবন বিনাশী পদক্ষেপ নিয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নির্বাচনি অঙ্গীকার শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), জনউদ্যোগ ও ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, যেখানে সারাবিশ্ব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তখন বাংলাদেশে নতুন নতুন কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হচ্ছে। গত ৪৭ বছরে বাংলাদেশের মানুষের যা যা বৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল, তার প্রতিটিই কমেছে। আর যেসব বিষয় কমার কথা ছিল, সেগুলো বেড়েছে।

তারা আরও বলেন, সবকিছু মিলিয়ে সাধারণ মানুষ মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় যাওয়ার আগে কল্যাণের কথা বললেও ক্ষমতায় যাওয়ার পর সেগুলোর বেশিরভাগ ভুলে যায়।

বিজ্ঞাপন

ডা. লেলিন চৌধুরী তার প্রবন্ধে বলেন, এরই মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় ধূলি ধূষিত নগরী হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। দেশের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ বনাঞ্চল থাকার কথা থাকলেও দেশে বনাঞ্চল ১০ শতাংশ। সারাবিশ্বে যেখানে কৃষিতে কীটনাশকের ব্যবহারের হার ২২ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশে এই হার ৩৯ শতাংশ।

যানবাহনের গতি কমে শহরে এখন ৬ কিলোমিটারে নেমে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, শব্দ দূষণে মারাত্মকভাবে শিশুসহ সব বয়সের মানুষের শ্রবণশক্তি কমে যাচ্ছে। ইটিপি অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে নানা প্রশ্নে জনমানুষের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।

আইন থাকা সত্ত্বেও পরিবেশ বিধ্বংসী, জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও ভেজাল বিষযুক্ত এবং অনিরাপদ খাদ্যে দেশ সয়লাব হয়ে যাচ্ছে এবং এসব কারণে মানুষ ‘দেশের আইন কেতাবে আছে প্রয়োগে নেই’ বলেই ধরে নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ডা. লেলিন।

সংসদে যারা নির্বাচিত হন, তারা কেন স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনের এসব কাজে নাক গলাবেন— সে প্রশ্ন তুলে সেমিনারে বক্তারা বলেন, সংখ্যানুপাতিক আসন বণ্টনের বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে। এতে নির্বাচনি আচরণ ও নির্বচনি পরিবেশ অনেকটা শান্তিপূর্ণ হতে পারে।

আসন্ন নির্বাচনে প্রচারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে পরিবেশ আইন মেনে চলার দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তারা পরিবেশের ওপর নজর দিতে সবাইকে আহ্বান জানান।

জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব তারিক হেসেনের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি প্রফেসর ডা. আবু সাঈদ, জনউদ্যোগের জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ডা. মুশতাক হোসেন, পবার সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহানসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএ/টিআর

জলবায়ু পরিবর্তন পবা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর