Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্বাচন কমিশনের আওয়ামী চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে: রিজভী


৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৪:১৬

রুহুল কবির রিজভী, ফাইল ছবি

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আওয়ামী চেহারা ক্রমশই উন্মোচিত হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচন কমিশনের আওয়ামী চেহারাটা ততটাই উন্মোচিত হয়ে পড়ছে। নির্বাচনের আগেই ক্ষমতাসীন দলের বিজয় নিশ্চিত করতে নানা রকম কলা-কৌশল ফন্দি-ফিকির করছে কমিশন। এর একটি ড্রেস রিহার্সেল হয়ে গেল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের মধ্য দিয়ে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই এবং বাতিল করা হয়েছে গণহারে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়নি। বিষয়টি এমন ছিল যে— বিএনপি হলেই অবৈধ আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেই বৈধ।’

রিজভীর অভিযোগ, ‘এইচ টি ইমাম যে তালিকা সিইসিকে দিয়েছেন, তাই বৈধ বলে প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন জেলার রিটার্নিং অফিসাররা। এই এইচ টি ইমাম সরকারের সকল কু-কর্মের হোতা। তবে এখনও আওয়ামী লীগের বোধোদয় হচ্ছে না যে, এই এইচ টি ইমাম যে কোনো মুহূর্তে চোখ উল্টে দিতে পারে।’

‘১৯৭৫ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমানের লাশ ডিঙ্গিয়ে খন্দকার মোশতাকের সাথে হাত মিলিয়েছিলেন। শপথ পড়িয়েছিলেন মোশতাক সরকারকে। তিনি যদি মরহুম শেখ মুজিবর রহমান ও আওয়ামী লীগের অনুসারী ও ভক্ত হতেন, তাহলে তো শেখ মুজিবর রহমানের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কেবিনেট সেক্রেটারি পদ থেকে পদত্যাগ করতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি ‘— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে সরকারের মনোবাঞ্ছা বাস্তবায়ন করার পর এখন মাঠের নিয়ন্ত্রণ যাতে ক্ষমতাসীন দলের হাতেই থাকে, সেজন্য নির্বাচন কমিশন কখনো প্রকাশে আবার কখনো পর্দার অন্তরালে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। ইসি নোটিশ দিচ্ছে নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে পোলিং এজেন্টদের তালিকা তাদেরকে দিতে হবে। যাতে সেই তালিকা ধরে নতুন করে ধরপাকড় শুরু করতে পারে।’

রিজভী বলেন, ‘গাজীপুর, রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা এমন পরিস্থিতি দেখেছি। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন এমপির দাপট তো থাকবেই। এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের প্রতিটি পদক্ষেপে ক্ষমতাসীন দল জোরালো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা প্রশাসনে রদ-বদলের দাবি করে এলেও মনে হয় আসাহাব কাহাবের মতো ইসি দীর্ঘকাল ঘুমিয়ে থাকবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার জন্য রেজা কিবরিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হলেও এক কোটি টাকার ঋণখেলাপি হয়েও বৈধতা পেল আওয়ামী জোটের বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী। ব্যাংকের লোক গিয়ে আপত্তি জানালেও রিটানিং কর্মকর্তা তা আমলে নেননি। রিটার্নিং কর্মকর্তা তা গণমাধ্যমের কাছে স্বীকারও করেছেন। বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালের আয়কর রিটার্নের নানাবিধ অসঙ্গতি থাকার পরও তার মনোনয়নপত্র বৈধ করেছে রিটার্নিং অফিসার।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ার‌ম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মুনির হোসেন, আমিনুল ইসলামসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এজেড/জেএএম

নির্বাচন কমিশন বিএনপি রিজভী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর