মাটির শত্রু সভ্যতা, দূষণ প্রতিরোধে দরকার সচেতনতা
৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:১১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: মাটির সবচেয়ে বড় শত্রু সভ্যতা। সভ্যতার কারণেই মাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও মাটি দূষণের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৬ কোটি লোক উদ্বাস্তু হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ইটভাটা, রাস্তা ও ভবন নির্মাণ এবং পুকুর খননসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ক্রমাগত মাটির ওপরের স্তর নষ্ট হচ্ছে।
বুধবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ফার্মগেটের আ.কা.মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়ামে সেমিনার ও সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এ সব কথা বলেন।
এর আগে, দিবসটি উপলক্ষে ‘মৃত্তিকা দূষণ, করি অনুশাসন’ প্রতিপাদ্যে সকালে এক বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে শুরু হয়ে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট চত্বরে এসে শেষ হয়।
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, ‘ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহারের কারণে সমুদ্রের নোনা পানি ওপরে উঠে আসছে। এতে লবণাক্ততা বাড়ছে। এ কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ ফসল ফলাতে পারছে না। বাড়ছে সিডর, আইলার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়।’
তিনি বলেন, ‘আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাসের মতো গাছের পরিবর্তে সরকারি রাস্তার পাশে পরিবেশবান্ধব গাছ লাগাতে হবে। জুম চাষ ও মাটি কাটার কারণে পাহাড়ে ভূমি ধ্বসে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ’
মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়, উপকূল, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা নদীর তলদেশসহ দেশের কোন কোন অঞ্চলের মাটির কী কী সমস্যা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। মাটিকে প্লাস্টিকের হাত থেকেও রক্ষা করতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে জেগে ওঠা নতুন জমিকে কাজে লাগাতে হবে। এরইমধ্যে জেগে ওঠা এ জমিকে কাজে লাগিয়ে অনেক কৃষক তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে।’
জৈব কৃষির বর্ণনা দিয়ে কৃষি সচিব বলেন, সম্ভাবনাময় ধৈঞ্চা ও মান্দার গাছ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়াও পরিবেশবান্ধব ভার্মিকম্পোস্টের ব্যবহার বাড়িয়ে কৃষির উৎপাদন খরচ কমাতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন ও প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান। আয়োজক প্রতিষ্ঠান কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক বিধান কুমার ভান্ডারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে বিজ্ঞানভিত্তিক তিনটি পেপার উস্থাপন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক, এফএও এর সিনিয়র কনসালটেন্ট মো. মাহবুবুর রহমান ও আইডব্লিউএম এর স্পেশালিস্ট মো. জাহিদ হাসান সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এ দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড. মো. আবদুল বারী।
অনুষ্ঠানে বিনার সাবেক মহাপরিচালক ড. এম ইদ্রিস আলীকে বিজ্ঞানী হিসেবে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এম জহির উদ্দীনকে শিক্ষক হিসেবে ও মর্জিনা বেগমকে কৃষক হিসেবে ২০১৮ সালের সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া সয়েল অলিম্পিয়াডে বিজয়ী ছাত্রছাত্রীদেরও পুরস্কৃত করা হয়।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে