Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেং ওয়ানঝৌ গ্রেফতার: আরও জটিল হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক


৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:০৮

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়েইর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝৌকে কানাডায় গ্রেফতারের ঘটনায় পশ্চিমা বিশ্বের সাথে চীনের অবিশ্বাস ও দ্বিধার নতুন সূত্রপাত হলো। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে শনিবার (১ ডিসেম্বর) কানাডার ভ্যানকৌবার থেকে মেং ওয়ানঝৌকে আটক করা হয়। তার কোম্পানির বিরুদ্ধে ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও হুয়াওয়েইর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেং ওয়ানঝৌ গ্রেফতার হওয়ার মতো কি করেছে তা তারা বুঝতে পারছে না। কানাডার বিচার বিভাগ জানায়, শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) জামিনের জন্য শুনানির সম্মুখীন হবেন মেং। খবর এনবিসির।

বিজ্ঞাপন

মেং ওয়ানঝৌ হুয়াওয়েইর প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেইর মেয়ে ও কোম্পানিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান। রেন ঝেংফেই চীনে শীর্ষ প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। চীনা সরকারের সহযোগিতায় তিনি দ্রুত তার ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটিয়েছেন। তাই প্রযুক্তিগত দিক থেকে হুয়াওয়েই গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে বলে আগেও আশঙ্কা করেছেন মার্কিন আইন প্রয়োগকারীরা।

বিশ্বে স্মার্টফোন বিক্রির দিক থেকে ২০১৮ সালে হুয়াওয়েই অ্যাপলকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে চলে আসে। যদিও হুয়াওয়েই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মার্কিনিদের কাছে খুব পরিচিত নাম নয়। শতকরা মাত্র ৩৮ ভাগ আমেরিকান কোম্পানিটির নাম শুনেছেন বলে জরিপে জানা যায়। স্মার্টফোন বিক্রি ছাড়াও হুয়াওয়েই মোবাইল টাওয়ার ও পরবর্তী প্রজন্মের ওয়েরলেস নেটওয়ার্ক সেবা ৫জি সম্প্রসারণে কাজ করছে। প্রায় ৮৯ বিলিয়ন ডলার রিভিনিউ ও ১ লাখ ৮০ হাজার কর্মচারী নিয়ে হুয়াওয়েই বর্তমানে বিশ্বের ৭ম বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানি।

বিজ্ঞাপন

কোম্পানিটির এত দ্রুত উত্থানকে সন্দেহের চোখেই দেখা হচ্ছে। মার্কিন সিনেটর টম কটন ফেব্রুয়ারিতে এক আলোচনায় বলেন, বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য চুরিতে হুয়াওয়েই চীন সরকারকে সহযোগিতা দিচ্ছে।

এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অগাস্টে এক আইনে স্বাক্ষর করে চীনা প্রতিষ্ঠান জেডটিই, হুয়াওয়েই ও অন্য একটি চীনা হার্ডওয়্যার কোম্পানি থেকে পণ্য কিনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। হুয়াওয়েইকে নিষিদ্ধ করেছে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডও।

নিজে দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিবে না চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিক্রিয়ায় জানায়, কোন কারণ না দেখিয়ে মেং ওয়ানঝৌকে গ্রেফতারের ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘন। চীন মেং এর দ্রুত মুক্তি দাবি করে।

তবে সিনেটের টেড ক্রুজ কোন রাখঢাক না রেখেই বলছেন, টেলিকম কোম্পানির মুখোশে হুয়াওয়েই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করছে। এক্ষেত্রে এদের ঘনিষ্ঠ ক্লায়েন্টরা হলো ইরান, সিরিয়া, নর্থ কোরিয়া ও কিউবা।

অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোন আপোষের ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে না। মেং ওয়ানঝৌ এর গ্রেফতারের ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ মেটাতে চেষ্টা করবে বলে জি-২০ সম্মেলনে ঘোষণা করেছে। এর আগে, জুলাই থেকে চীনা ২৫০ বিলিয়ন ডলার পণ্যে শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। চীন শুল্ক আরোপ করেছে ১১০ বিলিয়ন ডলার মার্কিন পণ্যে। বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান দুই শক্তির বাণিজ্যযুদ্ধ সাময়িকভাবে মিটে যাওয়ায়, এশিয়ার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছিল। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশ দুটির বাণিজ্য বিরোধ সহজে মেটবার নয়। হুয়াওয়েই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া তাই প্রমাণ করল।

সারাবাংলা/এনএইচ

বাণিজ্য বিরোধ মেং ওয়ানঝৌ হুয়াওয়েই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর