প্রতিশোধ নিতে মালিকের ৬ বছরের ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যা
৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৪০
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: চার মাস আগে ইট টানার কাজে ব্যবহৃত ট্রলির দুই কর্মচারী হৃদয় ও মিঠুর মধ্যে তুচ্ছ কারণে ঝগড়া করেছিল। ঝগড়ার অপরাধে কর্মচারী মিঠুকে ট্রলির মালিক মোফাজ্জল কয়েকটা চড় থাপ্পড় ও বকাঝকা করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিঠু তার মালিক মোফাজ্জলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে ট্রলি মালিকের ছয় বছরের ছেলে সিয়ামকে কাঞ্চন ব্রিজ থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে হত্যা করে পালিয়ে যায় মিঠু’ বলছিলেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১) এর কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খান।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ট্রলির মালিক মোফাজ্জলের একমাত্র সন্তান শিশু সিয়াম (৬) নিখোঁজ হওয়ার পর অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন মিঠুকে আটক করে র্যাব। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে আসে শিশু সিয়াম হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসামি মিঠুর বরাত দিয়ে শিশু সিয়াম হত্যার বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরেন র্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার এসপি আনোয়ার হোসেন খাঁন।
তিনি বলেন, ‘১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রপগঞ্জ এলাকার বিরাবের বাসিন্দা মোফাজ্জলের ছেলে সিয়াম নিখোঁজ হয়। এরপর তাকে খুঁজে না পেয়ে রূপগঞ্জ থানায় অপহরণের একটি মামলা দায়ের করা হয়। এতে অধিকতর সন্দেহভাজন হিসেবে মোফাজ্জলের ট্রলির কর্মচারী মিঠুকে আসামি করা হয়। এরপর থানা পুলিশ মিঠুর বাড়িতে গেলে সেখানে তাকে না পেলে সন্দেহ আরও দৃঢ় হতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব অভিযান পরিচালনা করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে রূপগঞ্জের গন্ধবপুর এলাকা থেকে আনোয়ার হোসেনের ছেলে মিঠু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব কমান্ডার আরও বলেন, ‘গত ১৩ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা অনুযায়ী মোফাজ্জলের শিশু সিয়ামকে কৌশলে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে এলাকার কাঞ্চন ব্রিজে নিয়ে যায় এবং সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ব্রিজ এলাকায় লোকজন আছে কি না সেটি পর্যবক্ষণ করার পর সিয়ামকে ব্রিজের রেলিংয়ের ওপর তুলে সেখান থেকে ঠেলা দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। এরপর থেকে সিয়ামের খোঁজ মিলছিল না।’
শিশু সিয়াম এলাকার বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘মিঠুর কাছ থেকে তাকে হত্যার ঘটনা শুনার আমরা র্যাকের একটা টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুর মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তাকে এখনও উদ্ধার করতে পারিনি। তবে মিঠুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এসএইচ/একে