আপিলে খালেদা জিয়ার ভাগ্য নির্ধারণ আজ
৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৫০
।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন কিনা তা নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আপিলে খালেদা জিয়ার আবেদন মঞ্জুর হলে তিনি সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন। কারাগারে থাকায় আপিল আবেদনের শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন না সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তবে তার আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেবেন। আইনজীবীরা আশা করেন, নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ মনোভাব দেখালে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন খালেদা জিয়া। তবে, ইসির আপিলে আবেদন নামঞ্জুর হলেও তিনি উচ্চ আদালতে পুনরায় আপিলের সুযোগ পাবেন।
শনিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের পক্ষে মনোনয়নপত্র কেনার মধ্য দিয়ে দলটির মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করে। খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া হয়। তবে তিনি দণ্ডিত হওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তারা তার মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করেন।
গত বুধবার (৫ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়া আইনজীবীর মাধ্যমে প্রার্থীতা বাতিলের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল আবেদন জমা দেন। এর মধ্যে ফেনী-১ আসনে কায়সার কামাল, বগুড়া-৬ আসনে নওশাদ জমির ও বগুড়া-৭ আসনে মাসুদ আহমেদ তালুকদার এসব আবেদন জমা দেন।
এছাড়াও আজ শনিবার কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, বিএনপি গিয়াস উদ্দিন কাদেও চৌধুরী, মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, আওয়ামী লীগ নেতা সাইমুম সরওয়ার, বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনসহ ২৩৩ জন প্রার্থীর আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নরুল হুদার নেতৃত্বে চার কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এ আপিল শুনানি করছেন। আপিল শুনানি পরিচালনা করবেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই দুইদিনে ৩১০ জন প্রার্থীর আপিল করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমদিনে ১৬০ জনের আবেদনের শুনানী শেষে ৮১ জন তাদের প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন, ৭৭ জনের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে এবং দুই জনের আবেদন স্থগিত রাখা হয়। দ্বিতীয় দিন ১৫০ জনের আপিল শুনানি শেষে ৮৪ জন বৈধ, ৫৯ জনের প্রার্থীতা বাতিল হয়েছে এবং ৭ জনের স্থগিত রাখা হয়েছে। আজ শনিবার ২৩৩ জনের আপিল শুনানি হবে।
এদিকে গত ২ ডিসেম্বর সারা দেশের রিটার্নিং কর্মকর্তারা ৭৮৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এই বাতিলের বিরুদ্ধে গত ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর প্রার্থীতা ফিরে পেতে ৫৪৩ জন প্রার্থী ইসিতে আপিল করেন। প্রথম দুইদিনে আপিলে ১৬৫ জনের প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন। আজ আপিল শুনানির শেষ দিন। নির্বাচন ভবনের ১০ তলায় বিশেষ এজলাসে আপিল শুনানি চলছে। প্রতিটি আবেদনের আপিল শুনানি শেষে রায় জানিয়ে দেওয়া হয়। কোনো ব্যক্তি যদি উচ্চ আদালতে কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চান, তাহলে তাকে রায়ের নকল কপি দিয়ে দেওয়া হবে।
গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করে ইসি, পরে ১২ নভেম্বর পুন:তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ২৮ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। গত ২ ডিসেম্বর ছিল যাচাই বাছাইয়ের শেষ দিন। সারা দেশে দাখিল করা ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়ন পত্র। বাছাইয়ের পর ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়ন পত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বাতিল হওয়া প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল করেন। এরপর ৬ ডিসেম্বর থেকে আপিল শুনানি শুরু হয়ে আজ ৮ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। আগামীকাল ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ।
সারাবাংলা/জিএস/এমএইচ