গেঁটে বাতের প্রকোপে পঙ্গুত্ব ঠেকাতে প্রয়োজন সমন্বিত চিকিৎসা
৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ২৩:৩৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: গেঁটে বাত সম্পূর্ণভাবে নিরাময় সম্ভব নয়, তবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আর চিকিৎসা না নিলে এ রোগ মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। যেমন-গিরা বাঁকা হয়ে অচল হয়ে যেতে পারে, কিডনি, ফুসফুস, ব্রেইন এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করতে পারে। তাই এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থা বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকরা।
রোববার (৯ ডিসেম্বর) গেঁটে বাতে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন চিকিৎসকরা।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘গেঁটে বাত বা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, শরীরের জয়েন্ট বা গিরার প্রদাহজনিত অসুখ। যেকোনও বয়সে এ রোগ শুরু হতে পারে, তবে দেশে সাধারণত নারীদেরই এ অসুখ বেশি হয়। অপরদিকে, ধূমপায়ীদেরও এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি রিহ্যাবিলিটেশন ক্লিনিক, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের উদ্যোগে এ মত বিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর সহযোগিতায় ছিল হেলথ কেয়ার বায়োটিক। অনুষ্ঠানে গেঁটেবাতে আক্রান্ত রোগীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিভাগের চিকিৎসকরা।
আরও বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক ডা. একেএম সালেক, অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুর রহমান, অধ্যাপক ডা. এমএ শাকুর, অধ্যাপক ডা. মো. আহসান উল্লাহ, ডা. মো. আলী ইমরান, ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ, ডা. মো. তরিকুল ইসলাম ও হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক সেবিকা দেবনাথ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মশিউর রহমান খসরু। তিনি জানান, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১ ভাগ মানুষ রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত আর বাংলাদেশে এর হার শতকরা ০.৭ ভাগ। সে হিসেবে আনুমানিক দেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। এ রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় সম্ভব নয়, তবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আর চিকিৎসা না নিলে এ রোগ মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। যেমন-গিরা বাঁকা হয়ে অচল হয়ে যেতে পারে, কিডনি, ফুসফুস, ব্রেইনের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করতে পারে। তাই এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থা।
‘যেখানে রোগীদের কেবলমাত্র রোগের চিকিৎসা নয়, বরং রোগীকে তার রোগ সর্ম্পকে জানানো হয় এবং তার জীবনব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ জন্য ২০১৬ সালে বিএসএমএমইউতে রিউমাটোলজি রিহ্যাবিলিটেশন ক্লিনিক চালু হয়। এবং এর পর থেকে প্রতি মঙ্গলবার এখানে বাতের রোগীদের সমন্বিত চিকিৎসা দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত এখানে ৩শো রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন’, জানান তিনি।
এ রোগ থেকে বাঁচতে দিনে অবশ্যই ৪০ মিনিট করে হাঁটতে হবে বলেন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শামসুন নাহার। তিনি বলেন, ‘৪০ মিনিট হাঁটলে ডায়াবেটিস বা আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ হবার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়, এই রোগ কাছেই আসবে না।’
সারাবাংলা/জেএ/এমও